২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সংস্করণ:
বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ করে দেশত্যাগের খবরে কুষ্টিয়া সদরের হানিফ এমপি ও মিরপুর-ভেড়ামারার সংসদ সদস্যদের বিলাসবহুল আলিশান বাসভবন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে আন্দোলনকারী বিক্ষুব্ধ জনতা। গত সোমবার (৫ আগস্ট) দফায় দফায় এ ঘটনা ঘটেছে। এসময় লুটপাটের ঘটনাও ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
এছাড়া জেলা ও থানা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কার্যালয়, কুষ্টিয়া মডেল থানা, ওসির বাসভবন, ভাস্কর্য ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থাপনা লুটপাট করেছে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয়রা ও বিক্ষুব্ধ জনতা বলেন, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে তিনবারের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে এমপির কামারুল আরেফিন অনিয়ম দুর্নীতির ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
দেশ-বিদেশ অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তারা দুজন মিলে কুষ্টিয়ায় টেন্ডারবাজী, মাদক ব্যবসায়, অবৈধভাবে পদ্মা-গড়াইয়ের বালু উত্তোলন, চাঁদাবাজী নিয়ন্ত্রণ করত। অসংখ্য মানুষকে নির্যাতন নিপিড়ন করেছে। তারা সন্ত্রাসী বাহিনীর গডফাদার। আমরা তাদের বিচার চাই। তাদের সকল অপরাধ সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক। আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। তাদের অত্যাচারে অসংখ্য মানুষ ঘর ছাড়া, অনেক মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি।
দীর্ঘ ১৫ বছরের ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। গত সোমবার (৫ আগস্ট) দিনব্যাপী ও গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত এই সহিংসতার চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবরে কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষুব্ধ জনতার ঢল নামে। এ সময় তারা আনন্দ উল্লাসে ফেটে পড়ে। কুষ্টিয়া মডেল থানা, শহরের পিটিআই রোডের হানিফ এমপির বাড়ির মালামাল লুট করা শুরু করে দুর্বৃত্তরা।
বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে এই লুটপাট। ফ্রিজ, সোফা, এসি, আসবাবপত্র সহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এসময় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। একইভাবে কুষ্টিয়া মডেল থানা থেকে অস্ত্র, মোটরসাইকেল, গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, ফ্রিজ, সোফা, এসি, আসবাবপত্র সহ বিভিন্ন জিনিসটা লুট করতে দেখা যায় দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিন কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে এমপির মিরপুরের আলিশান বাসভবন ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এছাড়াও কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, আঞ্চলিক কার্যালয় সহ বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভবনসহ একাধিক স্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এবিষয়ে কথা বলার জন্য এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ কর্মকর্তা ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলের ফোন রিসিভ করেন নি।
