কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী সড়কের বেহাল দশা - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী সড়কের বেহাল দশা

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: মে ১৯, ২০২৪

ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

 

কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে পাংশা পর্যন্ত সড়কে খানাখন্দে ভরে গেছে। এর ফলে যানচলাচল মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। ঘটছে প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনা। সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুষ্টিয়া প্রায় ২’শ কোটি টাকা ব্যয়ে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। কুমারখালী বাসস্ট্যান্ডে প্রায় এক হাজার মিটার সড়কটি চলাচলে একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এক দেড় ফুট সড়ক দেবে ক্যানেলের রূপ নেয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন ও পথচারীরা। এলাকাবাসী অভিযোগ করছে, বিগত দুই বছর ধরে এই মহাসড়কটির বেহাল দশা বিরাজমান। জনগুরুত্বপূর্ণ কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কটি দিয়ে প্রতিদিন কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও ঢাকাগামী অসংখ্য বাস, ট্রাক, টলি, অটোরিক্সা, পিকআপ ভ্যান, কাভার্ডভ্যান, মোটরসাইকেল ভ্যান রিকশা শতশত যানবাহন চলাচল করে। সড়কটি দেবে ও ভেঙে যাওয়ায় যানবাহনগুলো চলাচল করছে চরম ঝুঁকিতে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ওই ভাঙা অংশ কয়েকবার মেরামত করলেও কোনো কাজে আসেনি। মেরামতের মাস পেরোতে না পেরোতেই আবারও রাস্তা দেবে ভেঙে খানাখন্দে ভরে গিয়ে চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়ে। সড়কটি মেরামতের দাবি তুলে পৌর মেয়রসহ এলাকাবাসী মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে। বর্ষা আসার আগেই সড়কের যে বেহাল দশা তাতে বর্ষা আসলেই এই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। ভোগান্তিতে পড়বে সাধারণ জনগণ। পরিবহণ শ্রমিক আক্কাস আলী বলেন, আমরা যে কত বড় ঝুঁকি নিয়ে এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করছি তা বলার নেই। অটোচালক রিফাত বলেন, আমরা গরীব মানুষ, সামান্য একটি অটো কিনে এই সড়কে ভাড়া মারি কিন্তু সড়কের যে অবস্থা অটো চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই এই সড়কে যাত্রী নিয়ে অটো উল্টে পড়ছে। এতে করে যাত্রীরা রাস্তায় পড়ে আহত হচ্ছে। অটো ভেঙে যাচ্ছে। তার পরেও পেটের দায়ে ঝুঁকি নিয়ে অটো চালাতে হচ্ছে। ট্রাক ড্রাইভার আশিক বলেন, এই সড়ক দিয়ে পরিবহন চলাচল করা একেবারই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মাল ভর্তি ট্রাক নিয়ে এই রাস্তায় আসলে এই মনে হয় ট্রাক উল্টে গেল। যদি এভাবে চলতে হয় তা হলে পরিবহণ চলাচল বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। কুমারখালী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সোহাগ মাহমুদ বলেন, এই সড়ক নিয়ে বহুবার লেখালেখি হয়েছে তার পরেও কোন কাজ হয়নি। যখনই আন্দোলন শুরু হয় তখনই লোক দেখানো মেরামত শুরু করে সড়ক বিভাগ। আর ওই মেরামত কয়েকদিন যেতে না যেতেই আবারও ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। এমনভাবে মেরামত করছে যা টেকসই হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে এই জনগুরুত্বপূর্ণ কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কটি মজবুত করে মেরামতের মাধ্যমে চলাচলের ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা যাবে না। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম জানান, এই সড়কটি বার বার ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি মেরামত করেও টেকসই হচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত অংশটুকু ঢালাই করে মেরামতের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ২২ টনের রাস্তা দিয়ে ৫০ টনের পরিবহন চলাচল করছে। এই পরিবহন আবার ব্রেক করলে ১২০ টন হয়ে যায়। এতে করে রাস্তার ধারণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রাথমিকভাবে ঢালাইয়ের কাজ করার জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। বাজেট বরাদ্দের পর ঢালাই দিয়ে সংস্কার কাজটি বাস্তবায়ন করা হবে। এতে করে রাস্তা টেকসই ও মজবুত হবে।