কুষ্টিয়া-মেহেরপুর আঞ্চলিক সড়কে বাস চলাচল বন্ধ-ভোগান্তিতে যাত্রীরা - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

কুষ্টিয়া-মেহেরপুর আঞ্চলিক সড়কে বাস চলাচল বন্ধ-ভোগান্তিতে যাত্রীরা

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪

মিরপুর প্রতিনিধি ॥ বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকদের মধ্যে মারামারির জেরে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক সড়কে বাস চলাচল বন্ধ আছে। এতে গতকাল বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় বাস চলাচল বন্ধ ছিল। গত মঙ্গলবার কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা শহরে যাত্রী ওঠানো নিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ও বাসচালকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।

পরে গতকাল বিকেল থেকে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন কুষ্টিয়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন ও মেহেরপুর আঞ্চলিক বাস শ্রমিক সমিতির লোকজন। এতে সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েন। মেহেরপুর পৌর শহরের বাসিন্দা আলমগীর হোসেন কুষ্টিয়া শহরের একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। তিনি প্রতিদিন সকাল আটটায় মেহেরপুর কলেজ মোড় থেকে বাসে কুষ্টিয়ায় অফিসে যান। আজ সকালে মুঠোফোনে আলাপের সময় আলমগীর হোসেন বলেন, কোনো ঝামেলার কারণে বাস বন্ধ। কিন্তু পরিবহন শ্রমিকেরা সাধারণ যাত্রীদের অন্য কোনো বাহনেও উঠতে দেননি।

এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে তাঁদের। মেহেরপুর আঞ্চলিক বাস শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, কুষ্টিয়া-ভেড়ামারা আঞ্চলিক সড়কে অটোরিকশাচালকেরা বাসচালক ও সহকারীদের বেধড়ক মারধর করেন। এ কারণে কুষ্টিয়া বাস-মিনিবাস চালক সমিতির নির্দেশে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। প্রশাসন যদি অপরাধীদের দ্রুত আটক করে আইনের আওতায় আনে, তবে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে। কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পেশকার মঞ্জুরুল ইসলাম। তিনি আজ সকালে মেহেরপুর থেকে কুষ্টিয়া যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে বাসের জন্য মেহেরপুর শহরের টিঅ্যান্ডটি মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

তিনি বলেন, সকাল থেকে বাস শ্রমিক সমিতির লাঠিয়াল বাহিনী অন্য কোনো পরিবহনে যাত্রীদের উঠতে দেয়নি। পরে তিনি আরও দুই কিলোমিটার দূরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ের সামনে গিয়ে অটোরিকশায় কুষ্টিয়ায় যান। কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছেন নিলুফার ইয়াসমিন। বেশির ভাগ সময় তিনি কুষ্টিয়া শহরের ছাত্রীনিবাসে থাকেন। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে তিনি বাড়ি আসেন। আজ সকালে কুষ্টিয়ায় যাওয়ার জন্য দুই ঘণ্টা বাসের জন্য অপেক্ষা করে বাড়িতে ফিরে এসেছেন।

মেহেরপুর পৌর ৫নং ওয়ার্ডের ব্যাবসায়ী রহিদুল ইসলাম বলেন, দুপুরে স্ত্রীকে নিয়ে কুষ্টিয়া সনো হাসপাতালে ডাঃ দেখাতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখি গাড়ি চলাচল করছে না। কি করবো বাধ্য ফিরে আসলাম। জরুরী প্রয়োজনে আমাদের বাসে চলাচল করতে হয়। বিপদের সময় বাস চলাচল না করায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের। কুষ্টিয়া পলিটেকনিকে পড়া শিক্ষার্থী রাফিদ আহাম্মেদ ছুটিতে বাড়ি এসে ফিরে যাবার সময় বাস বন্ধ থাকায় আর যেতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে তার ভাই মোটরসাইকেল করে তাকে রেখে আসতে গেলেন।

সে বাস বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে। মেহেরপুরের অটোচালক সাকিল আহাম্মেদ বলেন, আমাদের মেহেরপুরে কোন সমস্যা নেই। ভেড়ামারায় সমস্য হবার কারনে কুষ্টিয়ার মালিকদের কথা শুনে মেহেরপুরের মালিকরা বাস বন্ধ করে রেখেছে। রাস্তা ফাকা আছে তাই আমরা অটো চালাচ্ছি। মেহেরপুরের বাস মালিক ঝন্টু মিয়া বলেন, মেহেরপুরে কোন সমস্য হয়নি। তবে কুষ্টিয়ার মালিক সমিতির আহবানে মেহেরপুরে বাস চলাচল বন্ধ আছে।

জেলার বাস অনান্য জেলার মালিকদের সাথে সমন্বয় করে চালাতে হয়। সেক্ষেত্রে এটা মালিক সমিতির সিধান্ত অনুযায়ী বন্ধ করা হয়েছে। সমাধান হলেই বাস চলবে। কুষ্টিয়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি আবদুল হামিদ মুকুল বলেন, অটোরিকশাচালকদের আক্রমণে মোটর শ্রমিকেরা আহত হয়েছেন। নিরাপত্তার অভাবে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর ও প্রাগপুর-মহিষকুণ্ডি রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। মীমাংসা হলেই বাস চলাচল স্বাভাবিক হবে।