নিজ সংবাদ ॥ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিল দখল করতে গিয়ে গণপিটুনিতে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ অন্তত ছয়জন আহত হয়েছে এবং কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের বোয়ালিয়া বিলের (জলমহাল) দখল নিতে গিয়ে সাহেদ হোসেন (২২) নামের জেলা ছাত্রলীগের এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ শাহেদকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ শেখ চ্যালেঞ্জের সমর্থক ও শহরতলীর মোল্লাতেঘড়িয়া এলাকার মহিবুল ইসলামের ছেলে। গতকাল শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বেয়ালিয়া ইউনিয়নের বিল বোয়ালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। স্থানীয়রা জানান, বোয়ালিয়া বিলের প্রায় ১৭ একর আয়তনের একটি অংশ গত ৫ বছর ধরে ভোগদখল নিয়ে মাছ চাষ করে আসছিলেন বোয়ালিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন মীর। এবারো তিনি ওই বিলে মাছ চাষ করেন। তার দখলকৃত অংশের ১২ একর খাস জমি থাকায় তা সরকারের কাছ থেকে নিজ নামে লিজ নেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ। শুক্রবার সকালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কর্মীদের নিয়ে বিল দখল করে মাছ ধরতে যায়। খবর পেয়ে আব্দুল মতিন মীর তার লোকজনকে নিয়ে শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ ও তার লোকজনকে ধাওয়া করে। এ সময় সংঘর্ষে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ উভয় গ্র“পের অন্তত সাতজন আহত হয়। আহতদের কুষ্টিয়া ও দৌলতপুর হাসপাতালসহ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ বলেন, সরকারী বিধি মোতাবেক তিনি ওই বিল লিজ নিয়েছেন। চলতি ১ বৈশাখ থেকে ওই বিলের জমি ভোগদখল পাওয়ার কথা। দখলদার মতিনকে বারবার তাগিদ দেয়ার পরও তিনি বিল হস্তান্তর করেনি। বিল বরাদ্দ পাওয়ার পর সেখানে কিছু মাছের পোনা ছেড়েছি। শুক্রবার সকালে লোকজন নিয়ে বিলের কাছে গেলে আব্দুল মতিন ও তার লোকজন হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করেন। আব্দুল মতিন মীর বলেন, দীর্ঘ ৫ বছর ধরে বিলের একটি অংশে মাছ চাষ করে আসছেন। বর্তমানে বিলে তার প্রায় ১০ লাধিক টাকার মাছ রয়েছে। চাষকৃত অংশের প্রায় ৯ একর জমির মালিকানা তার। কাউকে কিছু না জানিয়ে শুক্রবার কুষ্টিয়া শহর থেকে ছাত্রলীগের কর্মীদের ভাড়া করে নিয়ে এসে বোমাবাজি করে জোরপূর্বক বিল দখল ও মাছ লুট করতে আসে শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ। এত ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাদের ধাওয়া করে। দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, বিলকে কেন্দ্র করে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের সাথে কিছুটা ঝামেলা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত একজনকে কুষ্টিয়ায় চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়েছে বলে শুনেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
