কুষ্টিয়ার ৪টি আসনেই আমরা বিজয়ী হবো ইনশাআল্লাহ: প্রকৌশলী জাকির সরকার - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

কুষ্টিয়ার ৪টি আসনেই আমরা বিজয়ী হবো ইনশাআল্লাহ: প্রকৌশলী জাকির সরকার

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: নভেম্বর ৪, ২০২৫

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আসন্ন এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ার চারটি আসনে বিএনপির প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) গুলশান বিএনপির চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণায় জানা যায়

সংসদীয় আসন-৭৫, কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে প্রার্থী হয়েছেন দলের রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা। সংসদীয় আসন-৭৬, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন ব্যারিষ্টার রাগীব রউফ চৌধুরী। সংসদীয় আসন-৭৭, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে প্রার্থী হয়েছেন প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার। সংসদীয় আসন-৭৮, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ যাচাই-বাছাই ও তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতেই এ প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে।

মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করতে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে: কুতুব উদ্দিন

আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে এসব অভিজ্ঞ ও জনপ্রিয় নেতাদের মাঠে নামানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। অপরদিকে, কুষ্টিয়া কুমারখালী ও কুষ্টিয়াতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাবেক সংসদ সদস্য ও কুমারখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম আনছার প্রামাণিকের  সমর্থকরা। গতকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত ৮ টা ৩০ মিনিটের দিকে কুমারখালী ও কুষ্টিয়া শহরে এই বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।

বিক্ষোভ মিছিল থেকে  বিক্ষোভকারীরা ঘোষণা দেন এই আসনে মনোনয়ন পরিবর্তন করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। প্রয়োজনে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে দাবি করা হবে। কুমারখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম আনছার প্রামাণিক  জানান, যার সঙ্গে তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের যোগাযোগ নেই। তাকে মনোনয়ন দিলে উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা মেনে নেবে না।

মনোনয়ন পরিবর্তন না হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। কুমারখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, বিএনপি কাকে মনোনয়ন দেবে সেটা দলের বিষয়। আমরা দলের পক্ষে কাজ করবো। যারা বিক্ষোভ করেছে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। আমি আশা করি তারাও দলের পক্ষে কাজ করবে। এর আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির পক্ষ থেকে ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয় এবং বাকী আসন গুলোতে পরে ঘোষণা করা হবে জানানো হয়।  এর বাইরে কিছু আসন শরিকদের ছাড়া হবে। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বগুড়া-৭, দিনাজপুর-৩ ও ফেনী-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন। মির্জা ফখরুল নিজে ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। প্রার্থী ঘোষণার আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় জরুরি বৈঠকে বসেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

প্রায় পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত এবং চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, নজরুল ইসলাম খান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মির্জা আব্বাস, হাফিজ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাংগঠনিক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।

মনোনয়ন ঘোষনার পর কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের মনোনয়ন প্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী এক ভিডিও বার্তায় বলেন, আমি এর আগেও কয়েকবার নির্বাচিত হয়েছি, এবারও দল আমাকে ভালো প্রার্থী হিসাবে বিবেচিত করে মনোনয়ন দিয়েছে। এজন্য আমি দলের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি কুমারখালী খোকসার জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ বারবার আমাকে নির্বাচিত করেছেন। বিশেষ করে কুমারখালী খোকসার মা বোনেরা আমাকে অত্যন্ত সমর্থন করেন তাদের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞতা এবং অভিনন্দন জানাচ্ছি। এবারেও ধানের শীষে ভোট দিয়ে আমাকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করাবেন বলে আমি আশা করি। আমি যেন আপনাদের পাশে নিয়ে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

এদিকে কেন্দ্রীয়ভাবে মনোনয়ন ঘোষনার পর কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দলীয় নেতা কর্মিদের উদ্দেশ্যে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, বিগত দিনে অনান্য জেলার তুলনায় কুষ্টিয়া জেলায় সব থেকে বেশী আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছিলো। আজকে কুষ্টিয়ার ৪টি আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মনোনয়ন ঘোষণা করেছে। দল আমাদেরকে মনোনয়ন দিয়েছে, কুষ্টিয়া বিএনপি অধ্যুষিত জেলা। ইতিপূর্বে যতবার স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে বিএনপি ততবারই কুষ্টিয়ার সব গুলো আসনে জয়লাভ করেছে। আগামী নির্বাচনেও আমরা দলকে কুষ্টিয়ার ৪টি আসনেই আমরা বিজয়ী হবো ইনশাআল্লাহ। আজকে থেকে সকল ভেদাভেদ ভূলে প্রত্যেকটি আসনে জয়ের জন্য কাজ করতে হবে। উপস্থিত দলীয় নেতা কর্মিদের উদ্দেশ্যে জাকির হোসেন সরকার বলেন, মনোনয়ন পাওয়ার জন্য কুষ্টিয়াতে কোন মিষ্টি খাওয়া বা আনন্দ মিছিল হবে না। আমাদের বিজয় তখন হবে, যখন কুষ্টিয়া ৪টি আসন আমরা তারেক রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে পারবো।

জেলা বিএনপির আহবায়ক কুতুব উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ বিশ্লেষন ও মূল্যায়নের মাধ্যমে দল আজ সারা বাংলাদেশে ২৩৭টি আসনের মনোনয়ন ঘোষণা করেছে। দলের প্রতি নেতা কর্মিদের অনেক প্রত্যাশা থাকে। দলে ত্যাগি নেতা কর্মি শুধু একজন থাকে না, অনেক থাকে। নির্বাচন করার মতো যোগ্যতাও অনেকের থাকে। সবার প্রত্যাশা থাকে, সবার চাহিদা থাকে, সবাই আশাও করে থাকে। কিন্তু দলের যারা নীতি নির্ধারক, তারা নানান দিক বিবেচনা করে যোগ্যতার ভিতর থেকে মনোনয়ন দিয়ে থাকে। কুষ্টিয়ার ৪টি আসনে অসংখ্য ত্যাগী, যোগ্য ও বিচক্ষণ ব্যাক্তি ছিলেন। যেহেতু প্রতি আসনে প্রার্থী একজন করে, সেহেতু ৪ জনকে বেছে নিয়েছে দল। এর মানে এই না, যেই চারজন মনোনীত হয়েছে তারাই সর্বশ্রেষ্ট। দল তার ফয়সালা আমাদেরকে জানিয়েছে। মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করতে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।