বিশেষ প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পুলিশের ভয়ে পালাতে গিয়ে রফিকুল ইসলাম দুদু (৪৫) নামের এক আসামির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা সেখানে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে বেশ কয়েক ঘণ্টা আটকে রেখেছে। নিহত রফিকুল ইসলাম দুদু চন্ডিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ মন্ডলের ছেলে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ভেড়ামারার চন্ডিপুর গ্রামের দুদুকে ধরতে যায় ভেড়ামারা থানা পুলিশ। এসময় পুলিশের ভয়ে আসামি দুদু পালাতে যান।
পালাতে গিয়ে পড়ে যান তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করন। অভিযানে যাওয়া তিনজন পুলিশ সদস্যকে আটকে রেখেছে স্থানীয়রা। স্থানীয়রা বলেন, সন্ধ্যার দিকে রফিকুল ইসলাম দুদুকে ধরতে আসে থানা পুলিশ। পুলিশের ভয়ে পালাতে গিয়ে ব্রীজ থেকে পড়ে আসামির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় জনতা ও জাসদ নেতাকর্মীরা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এখনো এলাকাবাসী বেশ কিছু পুলিশ সদস্যকে আটক করে রেখেছে। ইউনিয়ন জাসদের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের ছোট ভাই নিহত দুদু।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা বলেন, পুলিশরা আটক করে দুদুকে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। এসময় দুদু যেতে চাইনি। এজন্য পুলিশ তাকে মারপিট করে মেরে ফেলেছে। এই হত্যার দায় পুলিশের। বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেন, রফিকুল ইসলাম দুদুকে রাত ৭টা ৩৮মিনিটে হাসপাতালে আনা হয়। এসময় জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে স্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, পালাতে গিয়ে আসামির মৃত্যু হয়েছে। এসময় স্থানীয়রা তিনজন পুলিশ সদস্যকে আটকে রেখেছে। আমি ঝামেলার মধ্যে আছি। পরে বিস্তারিত জানতে পারবো। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা গিয়েছেন। তারা সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরে ঘটনার বিস্তারিত জানানো হবে। এবিষয়ে কথা বলার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভেড়ামারা সার্কেল) আবদুল খালেক ও চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাফিজ তপনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেন নি।
