কুষ্টিয়ায় জিকে প্রকল্প পদ্মা-কপোতাক্ষ নদীতে পানিশূন্য অবস্থায় রয়েছে। পদ্মা নদীতে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ও খালের উপর সেতু নির্মাণের কাজ চলায় ভেড়ামারায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের খালে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে ফসলি জমিতে সেচ দিতে না পরায় ৪টি জেলার লক্ষাধিক কৃষক বিপাকে পড়েছেন।

কৃষকরা বলেন, জিকে সেচ প্রকল্পের আওতায় ৪ জেলার ১৩ উপজেলার পৌনে ৫ লাখ একর জমিতে সেচ দেয়া হয়। পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় বোরো ধান আবাদ ব্যাহত হতে পারে। ১৫ই জানুয়ারি সেচ প্রকল্পের আওতায় খালে পানি সরবরাহের কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত খাল পানিশূন্য ছিল। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, পদ্মায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এ ছাড়া ভেড়ামারায় প্রধান খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে মাটি ফেলে খালের অনেকাংশে ভরাট করে রাখা হয়েছে। এসব কারণে নির্দিষ্ট সময়ে খালে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভেড়ামারা প্রধান পাম্পহাউস সূত্রে জানা যায়, বছরের ১০ মাস (১৫ই জানুয়ারি থেকে ১৫ই অক্টোবর পর্যন্ত) দিনরাত ২৪ ঘণ্টা ৩টি পাম্পের মাধ্যমে পানি তোলা হয়। বাকি দুই মাস রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয়। পাম্প দিয়ে উঠানো পানি ৪ জেলায় ১৯৩ কিলোমিটার প্রধান খাল, ৪৬৭ কিলোমিটার শাখাখাল ও ৯৯৫ কিলোমিটার প্রশাখা খালে যায়। জিকে সেচ প্রকল্পের প্রধান এবং শাখা খালগুলোতে পানি থাকলে সেচ সুবিধাসহ আশপাশের টিউবওয়েল ও পুকুরে পানি স্বাভাবিক থাকে। পদ্মায় পানির স্তর স্বাভাবিক থাকলে প্রতি পাম্পে প্রতি সেকেন্ডে গড়ে ২৮ হাজার ৩১৬ দশমিক ৮৫ লিটার পানি সরবরাহ হয়ে থাকে। বর্তমানে ৩টি পাম্পের মধ্যে একটি পাম্প সচল রয়েছে। একটি পাম্প একেবারে নষ্ট। আরেকটি মেরামত করা হচ্ছে। কৃষকরা জানান, জিকে সেচখালের পানি দিয়ে ধানের আবাদ করতে যেখানে খরচ হয় ৩০০ টাকা, সেখানে ডিজেলচালিত পাম্পের পানি দিয়ে আবাদ করতে লাগছে ১০-১২ হাজার টাকা। তা ছাড়া জিকে খালের পানিতে ধানের ফলনও বেশি হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. হায়াত মাহমুদ বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে কিছু জায়গায় সেচের পানি প্রয়োজন। তাছাড়া আগামী ১০-১২ দিন পুরোদমে বোরো আবাদে কৃষকদের প্রচুর সেচের পানি প্রয়োজন। এখনই যদি খালে পানি না যায়, তবে কৃষকদের ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে।
