কুষ্টিয়ায় অটো চালকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

কুষ্টিয়ায় অটো চালকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: মে ২৯, ২০২৪

নিজ সংবাদ ॥ কুষ্টিয়ার মিরপুরে এক ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বাইপাস সড়কের রোজ হলিডে পার্কসংলগ্ন জিকে ক্যানাল থেকে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। লাশটি কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এ ব্লক এলাকার নিখোঁজ ইজিবাইকচালক শাহিনুল হক লিটনের (৪৭) বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। গত ১৮ মে বিকেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন লিটন। পুলিশ বলছে, শরীরে লাল গেঞ্জি ও জিনস প্যান্ট দেখে তাঁর ছেলে নিশ্চিত হয়েছে যে এটা তার বাবার লাশ। নিখোঁজের ঘটনায় লিটনের স্ত্রী মোছা. মনিরা হক বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেছেন। লিটন কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এ ব্লক এলাকার মৃত ইজাবুল হকের ছেলে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে জিকে ক্যানালে একটি অর্ধগলিত লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। প্রথমে ওই ব্যক্তির লাশ দেখে তাঁকে কেউ চিনতে পারেনি। পরে নীল নামের এক কিশোর লাশের গায়ে থাকা পোশাক দেখে শনাক্ত করেন যে, লাশটি তাঁর বাবা লিটনের। লিটনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৮ মে বিকেলে বাড়ি থেকে ব্যক্তিগত ইজিবাইক নিয়ে বের হন লিটন। এরপর তাঁর আর হদিস মেলেনি। লিটনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ ছিল। নিখোঁজের ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় লিটনের স্ত্রী সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। লিটনের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তারা উচ্চমাধ্যমিকে পড়াশোনা করে। নিখোঁজ হওয়ার দিন ইজিবাইক নিয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল এলাকার দিকে যান লিটন। নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সোহেল রানা জানান, লিটন নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁর পরিবার থেকে জিডি করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে গত ২৫ মে নিখোঁজ লিটনের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের নামে মডেল থানায় মামলা করেন। কাঁদতে কাঁদতে লিটনের স্ত্রী মোছা. মনিরা হক বলেন, ছেলে লাশের কাছে গেছে। সে পরনের প্যান্ট, জামা ও রং দেখে আমাকে জানিয়েছে যে, এটা ওর বাবার লাশ। তিনি আরো বলেন, আমার স্বামীকে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাই করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। নিহতের স্বজনরা বলেন, লিটন নিখোঁজের পর বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। গতকাল সকালে অজ্ঞাতপরিচয় লাশ উদ্ধারের খবর পাই। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আমাদের লিটন। নিখোঁজের ১০ দিন পর তার গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকে হত্যার পর ইজিবাইক ছিনতাই করেছে সন্ত্রাসীরা। জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর থানার ওসি মোস্তফা হাবিবুল্লাহ বলেন, লাশ দেখে মনে হচ্ছে কয়েক দিন আগে ক্যানালে ফেলে রাখা হয়েছিল। লাশটি অর্ধগলিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। পরনে লাল গেঞ্জি, জিনস প্যান্ট রয়েছে। পোশাক দেখেই লাশটি নিখোঁজ ইজিবাইকচালক লিটনের বলে দাবি করে তার পরিবার। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন নেই। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ইজিবাইক ছিনতাই করে তাকে শ্বাসরোধে বা বিষাক্ত কিছু খাওয়ানোর মাধ্যমে হত্যা করা হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।