কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ লাইসেন্স না থাকায় কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অটো ভ্যানচালকদের চাবি কেড়ে নেওয়া, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অন্তত ৩০০ জন চালককে নিজ অর্থায়নে ফ্রি লাইসেন্স প্রদান করেছেন উপজেলার ৮ নম্বর যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান মিজান।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সন্ধা সোয়া ৬ টায় যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে চালকদের হাতে লাইসেন্স তুলে দেন চেয়ারম্যান। এতে ব্যাপক খুশি চালকরা।জানা গেছে, পদ্মা ও গড়াই নদী দ্বারা তৃ-বিভক্ত সাংস্কৃতিক জনপদ কুমারখালী উপজেলা। একটি পৌরসভা ও ১১ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উপজেলায় প্রায় সাত লাখ মানুষের বসবাস।
সম্প্রতি গড়াই নদীর ওপর যদুবয়রা-সেরকান্দি পয়েন্টে একটি সেতু নির্মাণ করেছে বর্তমান সরকার।সেতু হওয়ায় যদুবয়রাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চালকরা সরাসরি যাত্রী নিয়ে উপজেলা শহর, পরিষদ চত্বর, হাসপাতাল, থানাসহ বিভিন্ন স্থানে চলাচল করছে।
তবে তাদের পৌরসভার লাইসেন্স না থাকায় সম্প্রতি কুমারখালী পৌর কর্তৃপক্ষ ইউনিয়নের চালকদের চাবি কেড়ে নেওয়া, অসদাচারণ, হুমকি, মারধরসহ নানান প্রকার নির্যাতন শুরু করেছে। এঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজস্ব অর্থায়নে অন্তত ৩০০ জন চালকদের ফ্রি লাইলেন্স প্রদান করেছেন।
প্রতিটি লাইসেন্সের মূল্য ২০০ টাকা করে।এবিষয়ে ভ্যানচালক সাইফুল ইসলাম জানান, শহরে প্রবেশ করলেই পৌরসভার লোকজন তাদের ভ্যান থামিয়ে ৫০০ টাকা দিয়ে লাইসেন্স করতে চাপ দেন। ৫০০ টাকা না দিলেই তাদের চাবি কেড়ে নিয়ে বসিয়ে রাখেন মারধর করেন।
মো. শরিফ নামের আরেক চালক জানান, লাইসেন্স না থাকায় প্রতিদিনই পৌরসভার কর্মচারীরা তাঁর সাথে খারাপ আচরণ করেন। সেজন্য মিজান চেয়ারম্যান তাকে ফ্রিতে লাইসেন্স প্রদান করেছেন। এতে সব ভ্যানচালকরা ব্যাপক খুশি।চালক আছরফ শেখ জানান, পৌর কর্তৃপক্ষের নির্যাতনের হাত থেকে চালকরা মুক্তি চান।
প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান জানান, পৌর কর্তৃপক্ষ লাইসেন্সের নামে চালকদের উপর অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন ও জুলুম করতেছে। ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে তিনি নিজস্ব অর্থায়নে ৩০০ জন চালককে বিনামূল্য লাইসেন্স দিয়েছেন।
যাঁর প্রতিটির মূল্য ২০০ টাকা।তিনি আরো জানান, পৌরসভার মধ্যে তিন ও চার চাকার যানবহন ঢুকলেই বিভিন্ন বেনামি সিলিপ দিয়ে চাঁদা আদায় করছেন পৌর কর্তৃপক্ষ। এগুলো বন্ধের জন্য তিনি স্থানীয় এমপি, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেছেন।
তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কুমারখালী পৌরসভার প্যানেল মেয়র এস এম রফিক। তিনি জানান, নিয়ম অনুযায়ী পৌরসভায় যানবাহন চলতে হলে লাইসেন্স করতে হবে। এখানে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম জানান, বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে তিনি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
