মিজানুর রহমান নয়ন ॥ কয়েক দফা হামলায় আতঙ্কিত আদায়কারীরা। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবে গত ৭ আগষ্ট থেকে কুষ্টিয়া – রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কস্থ কুমারখালীর গড়াই নদীর ওপর নির্মিত সৈয়দ মাসুদ রুমী সেতুর টোল আদায় বন্ধ রেখেছেন তারা। ফলে প্রতিদিন প্রায় চার লাখ টাকা করে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েও নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়নি বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম।
তিনি বলেন, ৭ ও ১৩ আগষ্টসহ কয়েক দফা হামলা হয়েছে টোলপ্লাজায়। বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়নি। ফলে প্রতিদিন প্রায় ৪ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। তাঁর ভাষ্য, গেল ৩৮ দিন টোল আদায় বন্ধ রয়েছে। এতে প্রায় এক কোটি ৫২ লাখ টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। জানা যায়, ২০০৪ সালে ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কুষ্টিয়া – রাজবাড়ী সড়কস্থ কুমারখালীতে গড়াই নদীর ওপর সৈয়দ মাসুদ রুমী সেতু নির্মাণ করে সওজ বিভাগ।
২০০৫ সাল থেকে সেতু ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ইজারাদারের মাধ্যমে টোল আদায় করছে সওজ বিভাগ। ইতিমধ্যে নির্মাণ ব্যয়ের কয়েকগুণ টাকা উত্তোলন করেছে সওজ বিভাগ। তিন অর্থবছর অন্তর অন্তর সেতু ইজারা দেওয়া হয়। চলতি বছরের জুন মাসে ইজারার মেয়াদ শেষ হলে খাস আদায় করছে সওজ বিভাগ। প্রতিদিন তিন – চার লাখ টাকা খাস আদায় হতো। সম্প্রতি প্রায় ৩৩ কোটি টাকায় সেতুটি ইজারা হয়েছে। তবে চলমান পরিস্থিতির কারণে দাঁয়িত্ব বুঝে নেননি ইজারাদার। সম্প্রতি সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আদায়কারীরা নেই। টোলপ্লাজায় ভাঙচুরের চিহৃ। টোল ছাড়াই অবাধে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহন ও মানুষ।
এসময় নাম প্রকাশ না করে শর্তে একজন মোটরসাইকেল আরোহী বলেন, ৭ আগষ্টের আগে ১০ টাকা করে দিয়ে পার হতাম। তবে এখন আদায় বন্ধ আছে। এতে সরকার রাজস্ব হারালেও খুশি চলাচলকারীরা। স্থানীয়দের ভাষ্য, সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের কয়েক টাকা উত্তোলন হলেও টোল আদায় বন্ধ হয়নি। এনিয়ে মানববন্ধন, আন্দোলন, কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। তবুও টোল আদায় চলমান থাকায় দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ বিরাজ করছে সকল জনসাধারণের মাঝে। সেজন্য ৭ আগষ্ট টোলপ্লাজায় ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়েছিল জনগন।
চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক মনজু বলেন, টোল বন্ধের দাবিতে বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুর করেছিল। এখন পরিবেশ স্বাভাবিক থাকলেও টোল আদায় বন্ধ রয়েছে। তাঁর ভাষ্য, সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হলেও জনগণের দাবি স্থায়ীভাবে টোল বন্ধের। কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আখতার বলেন, টোল আদায় বন্ধ আছে, এমনিতে সেটা তিনি জানেন। তবে জেলা প্রশাসক স্যার না থাকায় এটার এ্যাডভান্স হয়নি। তবে তিনি বিষয়টি দেখছেন বলে জানিয়েছেন।
