কুমারখালীর সৈয়দ মাসুদ রুমী সেতুর টোলপ্লাজায় হামলা - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

কুমারখালীর সৈয়দ মাসুদ রুমী সেতুর টোলপ্লাজায় হামলা

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: আগস্ট ৮, ২০২৪

কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কস্থ কুমারখালীর গড়াই নদীর ওপর নির্মিত সৈয়দ মাসুদ রুমী সেতুর টোলপ্লাজায় হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। গতকাল বুধবার (৭ আগষ্ট) সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঘটে এ ঘটনা। সেতুর টোল আদায় বন্ধের দাবিতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছেন আদায়কারী, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা।

অপরদিকে টোলপ্লাজায় হামলার খবর মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগের দ্রুততম মাধ্যম ফেসবুক ও এলাকায়। খবর পেয়ে সেতুর দুই প্রান্তে শত শত জনতা ভিড় জমান। এতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। সেতুটি উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নে অবস্থিত। জানা গেছে, ২০০৪ সালে ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কুষ্টিয়া – রাজবাড়ী সড়কস্থ কুমারখালীতে গড়াই নদীর ওপর সৈয়দ মাসুদ রুমী সেতু নির্মাণ করে সওজ বিভাগ।

২০০৫ সাল থেকে সেতু ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ইজারাদারের মাধ্যমে টোল আদায় করছে সওজ বিভাগ। ইতিমধ্যে নির্মাণ ব্যয়ের কয়েকগুণ টাকা উত্তোলন করেছে সওজ বিভাগ। তিন অর্থবছর অন্তর অন্তর সেতু ইজারা দেওয়া হয়। চলতি বছরের জুন মাসে ইজারার মেয়াদ শেষ হলে খাস আদায় করছে সওজ বিভাগ। প্রতিদিন তিন – চার লাখ টাকা খাস আদায় হচ্ছে। সম্প্রতি প্রায় ৩৩ কোটি টাকায় সেতুটি ইজারা হয়েছে। তবে চলমান পরিস্থিতির কারণে দাঁয়িত্ব বুঝে নেননি ইজারাদার। স্থানীয়রা জানান, সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের কয়েক টাকা উত্তোলন হলেও টোল আদায় বন্ধ হয়নি। এনিয়ে মানববন্ধন, আন্দোলন, কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। তবুও টোল আদায় চলমান থাকায় দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ বিরাজ করছে সকল জনসাধারণের মাঝে। 

বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে সেতুর পূর্বাঞ্চল থেকে এক দল লোক এসে টোল আদায় বন্ধ ঘোষণা করেন। এ নিয়ে আদায়কারীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তারা টোলপ্লাজায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এসময় একটি বাড়ি ও একটি দোকান ভাংচুর করা হলে সেতুর পশ্চিমাঞ্চলেও শতশত মানুষ ছুটে আসেন। এতে থমথমে পরিবেশ সৃষ্টি হলে প্রায় সকাল সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আদায়কারীরা কেউ নেই। যান চলাচল স্বাভাবিক। টোলপ্লাজায় ভাংচুর ও আগুনের চিহৃ। এসময় সেতুর টোল আদায় বন্ধের দাবি দীর্ঘদিনের বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি জানান, প্রথমে পূর্বাঞ্চলের লোকজন টোল বন্ধ ঘোষণা করে টোলপ্লাজা, দোকানপাট ও ঘরবাড়িতে ভাংচুর করে। পরে পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ ছুটে এসে ধাওয়া করে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে টোল আদায়কারী ও কুষ্টিয়া সওজের কর্মচারী জানান, প্রতিদিনের মতোই তারা টোল আদায় করছিলেন। তবে সকাল সাড়ে আটটার দিকে এক দল লোক এসে টোলপ্লাজায় ভাংচুর ও আগুন লাগিয়ে টোল আদায় বন্ধ ঘোষণা করেন। ছাত্র আন্দোলনকারী আসাদুজ্জামান আলী ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে লিখেছেন,  আজকে থেকে টোল বন্ধ ঘোষণা করা হলো। কেউ আর টোল দিবেন না। এটা ছাত্রসমাজের বাংলাদেশ। এ বাংলাদেশে কোনো চাঁদাবাজি হবে না।

চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক মনজু জানান, টোল বন্ধের দাবিতে বিক্ষুব্ধ জনতা ভাংচুর করেছে। তবে এখন পরিবেশ স্বাভাবিক। কুষ্টিয়া সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম জানান, টোলপ্লাজায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। আপাতত টোল আদায় বন্ধ। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাঁর ভাষ্য, প্রতিদিন প্রায় তিন-চার লাখ টাকা খাস আদায় করা হচ্ছে।