কুমারখালী প্রতিনিধি ঃ কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে চুরির অভিযোগে ভ্যানচালক মো. নাঈম শেখ (২৪ কে মারধর, চুল কাটা ও ফেসবুকে ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। ঘটনার তিন দিন পরে গতকাল শনিবার (২০ এপ্রিল) ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন। উক্ত মামলায় আরো ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। অপরদিকে এঘটনায় গত শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকৃতদের এজাহার নামীয় আসামি করে শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁরা হলেন – উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হোগলা গ্রামের মৃত গফুর শেখের ছেলে মো. রেজমত শেখ (৪৫) এবং একই গ্রামের সিরাজ সর্দারের ছেলে মিরাজুল ইসলাম (৪০)। আর নাঈম শেখ উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হোগলা গ্রামের মধ্যপাড়া এলাকার মৃত মানিক শেখের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ভ্যানচালক। পুলিশ ও এলাকাকাসী সুত্রে জানা গেছে, গত ১৭ এপ্রিল রাত ১০ টার দিকে জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হোগলা বাজার থেকে একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি গোপকগ্রাম যাওয়ার কথা বলে নাঈমের ভ্যানটি ভাড়া নেন। পথে ওই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর আরো দুই সহযোগী যুক্ত হন। একপর্যায়ে জোরপূর্বক ভ্যান থামিয়ে ওই ব্যক্তিরা কলাভর্তি একটি সাদা বস্তা ভ্যানে তোলেন। এ সময় স্থানীয়রা ধাওয়া করে ভ্যানচালক নাঈমকে আটক করে এবং মারধর করে চুল কেটে দেন। সেসময় জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর সদস্য ( মেম্বর) মো. খোকন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও মারধর ও চুল কাটার ৩৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিওটি ১৮ এপ্রিল রাতে সামাজিক যোগাযোগের সবচেয়ে দ্রুততম মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। মামলার বাদী নাঈম শেখ জানান, তিনি একজন ভ্যানচালক। রাত হওয়ায় অতিরিক্ত ভাড়া মিটিয়ে তিনি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের ভ্যানে উঠিয়েছিলেন। কিন্তু এমন ঘটনা ঘটবে তা তিনি বুঝতে পারেন নি। তাঁর ভাষ্য, হাসপাতালে ভর্তি থাকায় থানায় মামলা করতে দেরি হয়েছে। তবে ঘটনায় দোষীদের শাস্তি চেয়ে শনিবার মামলা করেছেন। জগন্নাথপুর ইউপির ৩ নম্বর সদস্য মো. খোকন জানান, তিনি জনপ্রতিনিধি হিসেবে দাঁয়িত্ব পালন করতে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। কিন্তু উৎসুক জনতার চাপাচাপিতে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন নি। সেজন্য অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তাঁর ভাষ্য, মানুষের উপকার করতে গিয়ে যদি বিপদে পড়তে হয়। তাহলে ভবিষ্যতে কেউ কারো আর উপকারে যাবেনা। বাদী এজাহার দিতে দেরি করায় মামলা রুজু করতে দেরি হয়েছে বলে জানায় থানার ওসি মো. আকিবুল ইসলাম। তিনি জানান, ভ্যানচালককে মারধর ও চুলকাটার ঘটনায় থানায় ৮ জনের নামে মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে দুইজন আসামিকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকিকুল ইসলাম আকিব বলেন, এই ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং দুই জন কে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
