কুমারখালীতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে আ’লীগ কর্মীদের দোকান দখলের অভিযোগ - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

কুমারখালীতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে আ’লীগ কর্মীদের দোকান দখলের অভিযোগ

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪

কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর কুষ্টিয়ার কুমারখালীর তারাপুর বাজারের আওয়ামী লীগ কর্মীদের ৪ টি দোকান তালা লাগিয়ে দখল করার অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রায় ৪০ দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। অভিযুক্ত ওই নেতার নাম হাজী আব্দুল করিম। তিনি উপজেলা য্দুলের সাবেক জ্যেষ্ঠ সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য। সরেজমিন তারাপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, তারাপুর-গোপকগ্রাম সড়কের দক্ষিণপাশে বেশকিছু দোকান ঘর রয়েছে।

তার মধ্যে নীল রঙ করা চারটি টিনসেডে আধাপাকা দোকান বন্ধ রয়েছে। সাটারে ঝুলছে তালা। এসময় সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে ছুটে আসেন ভুক্তভোগী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামের মৃত সদর উদ্দিনের ছেলে আব্দুস সাত্তার ও মো. গাফফার এবং মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মোক্তার প্রামাণিক ও আতর আলী। তারা আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক। তারা অভিযোগ করে বলেন, সড়কের ঘেঁষে জেলা পরিষদের ৬ শতাংশ জমি আছে।

সেই জমি সঙ্গে তাদের বাপ-দাদার প্রায় আট বিঘা পৈত্রিক সম্পত্তি রয়েছে। জেলা পরিষদের জমি ঘেঁষে অনেক আগে করা তাদের ১৬ টি দোকান ঘর ভাড়া দেওয়া রয়েছে। তবে ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরে বিকেলে বিএনপি নেতা লোকজন নিয়ে এসে দোকানে তালা লাগিয়ে দখল করে নিয়েছেন। হামলা ও মামলার ভয়ে এতোদিন তারা মুখ খুলতে পারেন নি। প্রভাব খাঁটিয়ে বিএনপি নেতা জবর দখল করেছে। সুষ্ঠ বিচারের আশায় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা।

তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএনপি নেতা হাজী আব্দুল করিম। তিনি বলেন, ২০০৭ সালে জেলা পরিষদ থেকে ৪০ ফিট দ্যৈর্ঘ ও ১০ ফিট প্রস্থের জায়গা ইজারা নিয়ে দোকান করেছিলেন। কিন্তু ওরা ( অভিযোগকারীরা) ২০১৬ সালে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ খানের সহযোগীতায় আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে তার দোকান ভেঙে দিয়ে ২০১৭ সালে আদালতে মামলা করেন। মামলায় আদালত তার পক্ষে রায় দিয়েছেন। আর সরকার পতনের পর ৫ আগষ্ট তিনি দোকান গুলো দখলে নেন। তার ভাষ্য, আদালত চলতি বছরের ১৮ আগষ্ট তার পক্ষে রায় দিয়েছেন। তিনি কারো দোকান দখল করেননি।

তবে তিনি আদালতের রায়ের একটি কপি দেখালেও ইজারা নেওয়ার কাগজপত্রাদি দেখাতে পারেন নি। ভুক্তভোগী আব্দুস সাত্তার বলেন, তার বাবা সদর উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন। চলতি বছরের ৭ মে মামলার শুনানীর দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তার আগেই বাবা মৃত্যুবরণ করেন। সেজন্য তারা শুনানীর দিন তারিখ জানতেন না। আর প্রভাব খাটিয়ে কৌশলে  আব্দুল করিম মামলাটি খারিজ করে নিয়েছেন। খারিজ বাতিলের জন্য ২৫ আগষ্ট আদালতে রিট করেছেন।

জানতে চাইলে জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ খান বলেন, জেলা পরিষদ থেকে উভয়পক্ষেরই ইজারা নেওয়া আছে। তবে মোক্তাররা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তিতে দোকান করেছে। আর আব্দুল করিম অবৈধভাবে দখল করেছে। এনিয়ে অতীতে অনেক সালিস – বৈঠক করেছেন তিনি। জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জয়নাল আবেদীনের ফোন নাম্বার বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, তদন্ত সাপক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।