কুমারখালীতে বিএনপি’র দুই পক্ষের মধ্যে লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

কুমারখালীতে বিএনপি’র দুই পক্ষের মধ্যে লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: নভেম্বর ৪, ২০২৪

কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌর বাস টার্মিনালে গতকাল রবিবার (৩ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় আয়োজিত বিএনপির দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ প্রশাসনের মৌখিক নিষেধাজ্ঞায় পণ্ড করেছেন আয়োজকরা। তবে আধিপত্য বিস্তারে একটি পক্ষ স্থান পরিবর্তন করে বাস টার্মিনাল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দুরে পথ সভা করেছেন।এসময় প্রতিপক্ষ ভেবে ভুল বুঝাবুঝিতে পথসভা করা গ্রুপেরই দু’পক্ষের মধ্যে লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম। গতকাল রোববার (৩ নভেম্বর) কুমারখালীর শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতুর দক্ষিণপাশে এ ঘটনা ঘটে।

দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যুবদলের ৪৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে রোববার সকাল ১০ টায় পৌর বাস টার্মিনালে আলোচনা সভার আয়োজন করেন এশিউর গ্রুপের চেয়ারম্যান শেখ সাদীর সমর্থকরা। এতে প্রধান অতিথি থাকার কথা ছিল বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শেখ সাদীর। তবে সাদীর দলীয় কোন পদ নেই। এ উপলক্ষ্যে তার সমর্থকরা সকল প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন।এদিকে একই স্থানে একই সময়ে ঐক্য ও শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন কুষ্টিয়া ৪ আসনের সাবেক এমপি মেহেদী রুমী সমর্থিকরা। এতে প্রধান অতিথি থাকার কথা ছিল কুমারখালী পৌর বিএনপির সাবেক সহ সম্পাদক আব্দুস সামাদ খান।

তারাও চিঠি ছাপিয়ে মাইকাংয়ে প্রচারণা করছিলেন।তবে একই স্থানে একই সময়ে দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশে ব্যাপক সংঘর্ষের সম্ভাবণা থাকায় গত শুক্রবার থেকে মৌখিকভাবে ভাবে কুমারখালী পৌর এলাকায় রোববার সকল ধরনের সভা সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় প্রশাসন। এরপর শহরের বিভিন্ন এলাকায় উভয়পক্ষের শোডাউন ও  ব্যাপক উত্তেজনা দেথা যায়। স্থানীয় প্রশাসনের কঠোরতৎপরতায় রোববার পৌর এলাকায় কোনো সভা সমাবেশ হয়নি। তবে আধিপত্য বিস্তারে সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীর সমর্থকরা শহরতলীর শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতুর দক্ষিণপাশে একটি পথ সভা করে। এসময় পথসভায় একটি মোটরসাইকেল শোডাউন পৌছালে প্রতিপক্ষ ভেবে তারা নিজেদের মধ্যে লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া করে।

গতকাল রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুমারখালীর হলবাজার, রেলস্টেশন, শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতু এলাকা সরেজমিন দেখা যায়, বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের অবস্থান রয়েছে। বাস টার্মিনাল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে মঞ্চ তৈরির সরঞ্জামাদি। প্রতিপক্ষের লোক ভেবে নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝিতে পথসভায় লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সাবেক এমপি মেহেদী রুমীর সমর্থক ও থানা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল ইসলাম আসাদ। তিনি বলেন, শহরে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় অনুষ্ঠানের স্থান ও ধরন পরিবর্তন করে সেতু এলাকায় পথসভা করা হয়েছে। এতে বিভিন্ন এলাকার দুই-তিন হাজার নেতাকর্মীরা উপস্থিত হয়েছিল।উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও সাদী গ্রুপের সমর্থক মো. লুৎফর রহমান বলেন, সকল প্রস্তুতি থাকা শর্ত্বেও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে।

প্রতিপক্ষরা নানা ভাবে বিশৃঙ্খলার পাঁয়তারা করছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের ভাষ্য, কে পাবেন কুষ্টিয়া ৪ ( কুমারখালী ও খোকসা) আসনে দলীয় মনোয়ন? এনিয়ে আধিপত্য বিস্তার ও দ্বিধা দ্বন্দে অন্তত ৫ খণ্ডে বিএনপির নেতাকর্মীরা। কেন্দ্রীয় ঘোষিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। রোববারের সমাবেশ বন্ধ হওয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা জুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে সংঘর্ষ।লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়ার ঘটনা অস্বীকার করে কুমারখালী থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, শহরের মধ্যে সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ। তবে একটি পক্ষ সেতুর দক্ষিণপাশে সীমিত আকারে একটি সভা করেছেন। এতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শহরে নজরদারি করা হচ্ছে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে একই স্থানে বিএনপির দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ হলে ব্যাপক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে। সেজন্য সংঘর্ষ এড়াতে উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাবেশে মৌখিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। পৌর এলাকায় কোনো সমাবেশ হয়নি গতকাল রোববার।