কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পল্লী বিদ্যুত সমিতির মনগড়া ভূতুড়ে ও অপ্রত্যাশিত বিল তৈরি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও গ্রাহকদের হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন কয়েক শত নারী, পুরুষ, ছাত্র ও সাধারণ জনতা।
গতকাল রোববার (২৫ আগষ্ট) সকাল ১১ টায় উপজেলা পরিষদের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা। পরে তারা একটি বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল বের করেন। মিছিলটি কুমারখালী বাসস্টান্ড, স্টেশনবাজার, থানামোড়, গণমোড়, হলবাজার প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে শেষ হয়। এরপর দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। মানববন্ধনে গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, কুমারখালী পল্লী বিদ্যুত সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মনগড়া ভূতুড়ে ও অপ্রত্যাশিত বিল তৈরি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও গ্রাহকদের হয়রানি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। দিন গেলেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বিদ্যুত বিল।
জুলাইয়ের তুলনায় আগষ্ট মাসে প্রায় দ্বিগুণ বিল এসেছে। তারা অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিচার এবং সুষ্ঠ সমাধান চান। এবিষয়ে উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের চড়াইকোল গ্রামের অটোচালক সুমন মাহমুদ বলেন, আমার বাড়িতে একটা লাইট ও তিনটা ফ্যান চলে। আর একটা অটোগাড়ি চার্জ দেওয়া হয়। এতে জুলাই মাসে ১২৫ ইউনিট বিদ্যুতের বিল এসেছিল। তবে একই বিদ্যুত ব্যবহার করে আগষ্টে বিল এসেছে ৩২৫ ইউনিটের।
তাঁর ভাষ্য, বিদ্যুত কর্তারা ভুয়া দ্বিগুন বিল করেছে। এলংগী এলাকার গৃহিণী আলেয়া খাতুন জানান, জুলাই মাসে তার বিল এসেছে ৩০ ইউনিট। আর একই বিদ্যুত ব্যবহার করে আগষ্টে বিল এসেছে ৩৭০ ইউনিট। তিনি দোষীদের শাস্তি ও বিল সংশোধনের দাবি জানান। বজরুক বাখই গ্রামের কৃষক শওকত আলী বলেন, দিন দিন লাফিয়ে বাড়ছে বিল। মার্চে ৫০, এপ্রিলে ১০০, মে ১৫৫, জুনে ১৩০, জুলাইয়ে ১৭০ আর আগষ্ট মাসে বিল এসেছে ২২০ ইউনিট। বিল বাড়ার কারণ জানতে বারবার অফিসে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছি। তবুও কারণ জানতে পারিনি। মমতাজ বেগম নামে এক গ্রাহক বলেন, দিন গেলেই বাড়ছে বিল।
কিছু জানতে চাইলেই বিদ্যুতের লোক খারাপ আচরণ করে বলে, মিটার বদল করে নেন। তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কুমারখালী পল্লী বিদ্যুতের সমিতির ডিজিএম মো. আনছার উদ্দিন। তিনি জানান, কোনো অনিয়ম হয়নি। রিডিং অনুযায়ীই বিল তৈরি করা হচ্ছে। তবে যন্ত্রাংশের কোনো ত্রুটি থাকতে পারে। সেগুলো ক্ষতিয়ে দেখা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম জানান, নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে গ্রাহকরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ শেষে তার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। তিনি বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখবেন।
