মোশারফ হোসেন ॥ কুষ্টিয়া কুমারখালীতে বৃষ্টির পানিতে বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। পানি উঠেছে উপজেলা হাসপাতাল চত্বরে । এতে বিপাকে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। এছাড়া কিছু এলাকায় বসতঘরেও ঢুকেছে পানি। গতকাল বুধবার (২১ আগস্ট) সরেজমিন দেখা যায়, কুমারখালী উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিচতলার বারান্দায়, জরুরি বিভাগ, সাধারণ বিভাগ ও প্রশাসনিক বিভাগসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও বেশকিছু বিভাগের পাশে পানি ঢুকে পড়ছে।
এতে পানিতে তলিয়ে রয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিচতলার চারপাশ। কুমারখালী ৫০ শয্যা হাসপাতাল ও আশপাশের এলাকা তিন ফুট পানির নিচে চলে যায়। জমে থাকা পানি বের করার সুযোগ নেই। দিনের পর দিন হাসপাতাল চত্বরে জমে থাকা পানির কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসক, নার্স, রোগী, স্বজন ও কর্মচারীদের। সেই সঙ্গে সাপের উৎপাত বাড়ায় আতঙ্কে রয়েছেন তারা।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় জমে থাকা পানি শুকাচ্ছে না। ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে হাসপাতালের মূল ভবনসহ নতুন বিল্ডিং, স্টাফ কোয়ার্টার, মসজিদ, করোনা ইউনিটসহ পুরো এলাকা পানিতে টইটম্বুর। স্টাফ কোয়ার্টারের নিচতলায় পানি ঢুকে পড়েছে। অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণ, পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকা, সময়মতো ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার না করায় নালা, নর্দমা ও খাল ভরাট হয়ে কুমারখালী পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে যায় বলে জানান স্থানীয়রা।
চিকিৎসা নিতে আসা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকেই হাসপাতাল চত্বরে পানি উঠে গেছে। পানিতে কষ্ট করে চিকিৎসকরা চিকিৎসাসেবা প্রধান করছেন। বাইরের থাকা ময়লা-আবর্জনাযুক্ত পানি ডিঙিয়ে দাঁড়িয়ে দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীরা জরুরি বিভাগে সেবা নিচ্ছেন বলে জানান তারা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উপজেলার সদকী ইউনিয়নের হোসেন বলেন, ‘দুই দিন ধরে হাসপাতালে এসে পানি ডিঙিয়ে চলাচল করছি। এত বড় হাসপাতালের এমন দুরবস্থা।
এখানে মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে। পানি বের করার কোনও চেষ্টাই নেই। তার ওপর রাতে সাপ ঢুকছে। মশাও উৎপাত করছে। কোলের শিশুকে নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা , আরাফা বেগম বলেন, ‘অসুস্থ বাচ্চা নিয়ে এসে পানির কারণে আরেক ভোগান্তিতে পড়েছি। অটো থেকে নেমে দেখি, গেটের পরই হাঁটুপানি। বাধ্য হয়ে রিকশা নিতে হলো জরুরি বিভাগে যেতে। এ টুকুর জন্য অতিরিক্ত ৪০ টাকা খরচ করতে হয়েছে। অনেকে পানি মাড়িয়েই যাচ্ছে।
নোংরা পানিতে নামায় অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা আছে। কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহসানুল মিজান রুমী জানান, কুমারখালী পৌর এলাকার মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে ড্রেন ব্যবস্থা নেই। হাসপাতালের পুকুরের পানি জুমে যাওয়ায় পানি নামতে পারছে না। হাসপাতালের নিচতলায় পানি ঢুকে পড়ার সম্ভব রয়েছে। কষ্টের মধ্যেও আমরা চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে।
