কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত তিন জন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে কুমারখালী পৌরসভার ছালপট্টি এলাকায় ঘটে এ ঘটনা। আহতরা হলেন-উপজেলা সদকী ইউনিয়নের দড়িমালিয়াট গ্রামের কাদের প্রামাণিকের ছেলে আব্দুল লতিফ ২৫) ও আইয়ুব আলীর ছেলে মো. সাইম (১৯)।
অপরজন একই ইউনিয়নের করাতকান্দি গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে সাগর হোসেন সাবু (২২)। তারা ছাত্রদলের কর্মী-সমর্থক। তাদের মধ্যে লতিফ ও সাইম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলা ছাত্রদলের আহব্বায়ক সোহানুর রহমান সোহানের সমর্থকদের সঙ্গে সাবেক উপজেলা ছাত্রদলের আহব্বায়ক আতিকুর রহমান সবুজের সমর্থকরা লাঠিসোঁটা, হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
সংঘর্ষে সবজু পক্ষের আব্দুল লতিফ ও মো. সাইম এবং সোহান পক্ষের সাগর হোসেন সাবু আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সরেজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, দুই নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন আহত লতিফ ও সাইম। তাদের মাথায় ও হাতে ব্যান্ডস বাঁধা। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ। এসময় লতিফ ও সাইম বলেন, সদকী ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা শিমুলের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
তারা অভিযোগের খোঁজখবর নিতে সকালে পরিষদে গিয়েছিলেন। শিমুল ছাত্রদলের আহবায়ক সোহানের লোক। এরপর তারা দুপুরে ছালপট্টিতে চা পান করছিলেন। এসময় সোহানের নেতৃত্বে কাজী সোহান, শিমুল, হাসিমসহ বেশকিছু ছাত্রদলের কর্মী লাঠিসোঁটা, হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তাদের উপর অতর্কিত হামলা করেন। তাদের মাথা, হাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাদের ভাষ্য, তারা ছাত্রদল নেতা সবুজের সমর্থক। তারা থানায় মামলা করবেন।
তবে ঘটনায় সময় সোহান উপস্থিত ছিলেন না। আহত সাগর হোসেন সাবু ফোনে বলেন, সকালে লতিফ ও সাইম লোকজন দিয়ে পরিষদের তার একজন আত্মীয়কে মারধর করে। মারধরের কারণ জানতে ছালপট্টিতে গেলে ওরা তাকেও মেরে মাথা ফাটিয়েছে। তবে তিনি কারো সমর্থক নন বলে দাবি করেন। এবিষয়ে জানতে সদকী ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা শিমুল হোসেনকে বার বার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক সোহানুর রহমান সোহান বলেন, তিনি বার তার লোক কোথাও মারামারি করেনি। তার কোনো লোক আহতও নেই। তবে তিনি শুনেছেন সকালে লতিফ ও সাইম পরিষদে দিয়ে হট্টগোল করেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সাবরিনা বলেন, তিনজন মারামারির রোগী এসেছিল। তাদের মধ্যে একজন চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। অপর দুইজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) মো. আকিবুল ইসলাম বলেন, একই দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখন পর্যন্ত কোনোপক্ষই লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় সঠিক কারণ জানা যায়নি।
