এমপি কামরুলের ঠিকাদারি কাজ শেষ করতে বিএনপি নেতা আব্দুল হকের বিশেষ ভূমিকা - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

এমপি কামরুলের ঠিকাদারি কাজ শেষ করতে বিএনপি নেতা আব্দুল হকের বিশেষ ভূমিকা

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: নভেম্বর ২১, ২০২৪

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সম্প্রতি দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও তাদের সহযোগীদের দেশ ত্যাগ করার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে এমপি কামরুল আরেফিনের ঠিকাদারি কাজ শেষ করতে বিএনপি নেতা আব্দুল হকের বিশেষ ভূমিকার বিষয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে, এমন এক পরিস্থিতিতে উঠে এসেছে একটি নতুন বিতর্ক, যেখানে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী এমপি কামরুল আরেফিনের ঠিকাদারি কাজ পরিচালিত হচ্ছে বিএনপি আব্দুল হকের মাধ্যমে। এই ঘটনা এলাকায় নানা প্রশ্ন ও সমালোচনা তৈরি করেছে। কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার আমলা জাহানারা বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় একটি চারতলা ভবন নির্মাণের জন্য ১,৩২,৬৫,৫০০ টাকার বরাদ্দ আসে।

এই কাজটি ২০২৪ সালের ২ জুলাই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কামরুল আরেফিনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আরিফিন ট্রেডার্স এর কাছে বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, কামরুল আরেফিন দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর, এই কাজটি অক্টোবর মাস থেকে পরিচালনার দায়িত্ব বিএনপি নেতা আব্দুল হক ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী সদরপুরের আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হামিদ এর কাছে চলে আসে। কেমন করে আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল আরেফিনের কাজ বিএনপি নেতা আব্দুল হকের সহযোগিতায় বাস্তবায়ন হতে পারে, তা নিয়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠছে। এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন, কেননা একদিকে তারা দেখছেন রাজনৈতিক দল বদল, অন্যদিকে একই প্রকল্পে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে উঠছে। স্থানীয় রাজনীতিতে এই সম্পর্কের বিপরীতে নানা ধরনের গুঞ্জন এবং সমালোচনা শোনা যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনাকে নিয়ে ক্ষুব্ধ এবং হতাশ। তারা দাবি করছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ঠিকাদারি কাজ সম্পন্ন করতে যাদের সহযোগিতা পাওয়া গেছে, এখন তারাই বিএনপি নেতাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে।

এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি প্রশ্ন উঠে এসেছে: রাজনীতির জন্য কি জনগণের স্বার্থ উপেক্ষিত হবে? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের পরিস্থিতি রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রকাশ এবং এটি দেশের শাসনব্যবস্থার দুর্বলতা হিসেবে দেখা দিতে পারে। তারা মনে করেন, এমন ঘটনা দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থার ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে। এদিকে, দলীয় নীতি অনুযায়ী, যদি কোনো নেতা দুর্নীতি বা অবৈধ কার্যকলাপে লিপ্ত হন, তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এ বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া জরুরি যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা পুনরায় না ঘটে। বিষয়টি নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক এনামুল হোসেন এবং সহকারী শিক্ষক আমিরুল ইসলাম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রতিবাদ করে।

তারা অভিযোগ করেন যে, তাদের এই প্রতিবাদ করার পর তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীদের মধ্যে রয়েছেন আব্দুল হক জামিল উদ্দিন, সন্ত্রাসী সাহাবুল ইসলাম এবং সন্ত্রাসী শাহিন রেজা। শিক্ষকরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে ঘটনার বর্ননা করেন, যেখানে তারা বলেন, “আমরা কোনও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম, কিন্তু আমাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে।” শিক্ষকরা বলেন, “এটি শিক্ষার পরিবেশকে বিপন্ন করেছে এবং অনৈতিকতার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থানকে দুর্বল করে ফেলেছে। এখন সময় এসেছে সরকার এবং বিরোধী দল উভয়ের কাছে তাদের নিজেদের শুদ্ধতার প্রশ্নে জবাবদিহি করার। জনগণের মধ্যে বিশ্বাসের ঘাটতি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্কের জটিলতা মেটাতে যদি সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তা না হলে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা আরো বাড়তে পারে। এদিকে সব অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক বিএনপি নেতা আলহাজ¦ আব্দুল হক বলেন, আমি এসব ক করিনি। আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। আমার ব্যক্তিগত শত্রুরা মিথ্যা রটাচ্ছে।