উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় আহত লেঃকর্ণেল খালেকুজ্জামানের পরিবার - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় আহত লেঃকর্ণেল খালেকুজ্জামানের পরিবার

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় আহত লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার খালেকুজ্জামানের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। ইতিমধ্যে তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁর আহত হওয়ার খবর জেনেছেন। তাঁর মা দিলারা জামান অসুস্থ। তিনি জানিয়েছেন, ছেলের আহত হওয়ার খবর তিনি টিভিতে দেখেছেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, খালেকুজ্জামানের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত খোন্দকার আক্তারুজ্জামান। মা দিলারা জামান একমাত্র মেয়ে শামীমা আক্তারের সঙ্গে কুষ্টিয়া শহরের গোসালা সড়কে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।

খালেকুজ্জামানের স্ত্রী ও দুই সন্তান থাকেন বগুড়া ক্যান্টনমেন্টে। চলতি বছর জানুয়ারি মাসে সুদানে শান্তি রক্ষা মিশনে যোগ দেন খালেকুজ্জামান। বগুড়া ক্যান্টনমেন্টে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার (সিও) ছিলেন। ১৯৯৯ সালে কুষ্টিয়া জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। কুষ্টিয়া শহরের ঈদগাহপাড়ায় তাঁদের বাড়ি। সেখানেই তাঁর শৈশব কেটেছে। খালেকুজ্জামানের বড় বোন শামীমা আক্তার পারিবারিক কাজে ঢাকায় রয়েছেন। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, ড্রোন হামলায় তাঁর ভাইয়ের বাঁ হাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তবে অবস্থা গুরুতর নয়। ঘটনার পরপরই হেলিকপ্টারে করে তাঁকে আবেই হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে। পরিবারের সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি। এ সময় বাড়ির পাশেই বসবাসরত চাচা ও খালাতো বোনের কাছ থেকে জানা যায়,খালেকুজ্জামানের মা শহরের গোশালা রোডে থাকেন।

তবে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। মুঠােফােনে বলেন,তিনি জানতে পেরেছেন তার ছেলে আহত হয়েছেন। আহত খালেকুজ্জামানের খালাতো বােন গুলশান আরা হাসান বলেন,আমাদের সামনে কোলে পিঠে মানুষ হইছে খালেকুজ্জামান। খুব ভালো ছেলে। শুনেছি শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়ে হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে। দোয়া করি ও যেন দ্রুত সুস্থ হয় ওঠে। এ সময় কথা হয় চাচা খন্দকার আসাদুজ্জামান খোকনের সাথে। তিনি অশ্রুসিক্ত অবস্থায় বলেন,খালেকুজ্জামান আমার মেজাে ভাইয়ের ছেলে।শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়েছে। সেখানে সন্ত্রাসী হামলায় তার কয়েকজন সহকর্মী নিহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।

সেও গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বিবাহিত জীবনে তার এক ছেল ও এক মেয়ে আছে। গতকাল রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা তিনটার দিকে কুষ্টিয়া শহরের গোসালা সড়কে শামীমা আক্তারের ভাড়া বাসায় গিয়ে দেখা যায়, ভবনের তিনতলায় মেয়ের বাসায় থাকেন মা দিলারা জামান। ভবনমালিকের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে দিলারা জামান বলেন, ছেলে মিশনে যাওয়ার ১৮ দিন পর একটু কথা হয়েছিল। আম্মা বলে একটু ডেকেছিল। এরপর আর কথা হয়নি। পরিবারের অন্যদের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা প্রতিদিন খবর নেন। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘সেখানে (সুদানে) নেট থাকে না। কারেন্ট থাকে না। ঘটনা (হামলা) সম্পর্কে কেউ কিছু আমাকে জানায়নি। আমি প্রেসারের রোগী। টিভিতে একটু দেখছি। কথাও বলতে পারছি না, কষ্ট হচ্ছে। ছেলের জন্য দোয়া করছি, যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে আমার কাছে আসে।