কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ককটেলসদৃশ ছয়টি বস্তু উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) মধ্যরাত ও গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত এসব বস্তু উদ্ধার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক শাহাদৎ হোসেন আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সহায়তায় ককটেলসদৃশ বস্তুগুলো পানিভর্তি বালতিতে রাখা হয়েছে। একেকটির ওজন আধা কেজি হতে পারে। এদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় ককটেলসদৃশ বস্তু উদ্ধারের ঘটনায় ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর গত সোমবার থেকে ক্যাম্পাসে ক্লাস শুরু হয়েছে। হলগুলোও খোলা রয়েছে। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন। প্রক্টর শাহাদৎ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে জানতে পারেন, লালন শাহ হলের পাশে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের পকেট গেটে দুটি ককটেলসদৃশ বস্তু পড়ে আছে। বিষয়টি জানার পর তিনি পুলিশ ও নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যদের সহায়তায় উদ্ধার করেন। এরপর সকাল সাতটার দিকে জিয়া হলের সামনে একটি, ব্যবসায় অনুষদ ভবনের পাশে দুটি এবং সকাল নয়টার দিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে একটি ককটেলসদৃশ বস্তু পাওয়া গেছে। সব কটি একই রকমের। লাল স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো। উদ্ধার হওয়া সব কটি ককটেলসদৃশ বস্তু পানিভর্তি বালতিতে রাখা হয়েছে। উদ্ধারকৃত বস্তুগুলো সংগ্রহের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুরো ক্যাম্পাস তল্লাশির সিদ্ধান্ত নেয়। জানা যায়, গতকাল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নেতৃত্বে পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীরা অভিযান চালায়। এসময় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক থেকে প্রায় ২৫ জন পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীদের নিয়ে এ অভিযান শুরু হয়। কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে তারা পুরো ক্যাম্পাসে তল্লাশি চালান। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ঘুরে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের পাশে তল্লাশি অভিযান শেষ হয়। তবে নতুন করে কোনো কিছু পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের পুরো ক্যাম্পাসে তল্লাশি অভিযান চালাতে অনুরোধ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তল্লাশি চালিয়েছি। তবে নতুন করে কিছু পাওয়া যায়নি। আমাদের নজরদারি ও বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা আছে। দোষীদের শনাক্তকরণে কাজ চলছে। উদ্ধারকৃত বস্তুগুলো কী ধরনের বিস্ফোরক তা পরীক্ষা করতে র্যাবের কাছে পাঠানোর কার্যক্রম চলছে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘এ ঘটনার পর থেকেই আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুরো ক্যাম্পাস তল্লাশি চালিয়েছি। তবে নতুন করে কোনো ককটেলসদৃশ্য বস্তু উদ্ধার হয়নি। শনিবার থেকে সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলবে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
