ইবি প্রতিনিধি ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে ৯ দফা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ পরবর্তী সময়ে শাখা ছাত্রলীগের কার্যালয় ভাঙচুর ও প্রধান ফটকে গ্রাফিতি অঙ্কন করে ক্যাম্পাসকে রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস ঘোষণা করেন তারা। গতকাল শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল ১১ টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি সমন্বয়কদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা।
মিছিলটি ক্যাম্পাসের প্রধান সড়ক, পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া বাজার প্রদক্ষিণ করে মেইন গেইটে সমবেত হয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। এসময় প্রায় ১ ঘন্টা কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। এরপরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটে বিক্ষোভ সমাবেশের শেষের দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীর ছদ্মবেশে একদল যুবক ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে।
শান্তিপূর্ণভাবে তারা মেইন গেট থেকে জিয়া মোড় পর্যন্ত এলেও এরপরেই আশপাশে থাকা লাঠি সোটা দিয়ে জিয়া মোড়ে অবস্থিত শাখা ছাত্রলীগের কার্যালয়ে হামলা চালায় তারা। এসময়ে কার্যালয়ের ভেতরে থাকা চেয়ার, টেবিল, টিভি ও অন্যান্য আসবাবপত্র ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, বন্ধ ক্যাম্পাসে বিএনপি জামায়াতের শিক্ষকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ছাত্রশিবিরকে লেলিয়ে দিয়ে আমাদের ছাত্রলীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে। ক্যাম্পাস বন্ধ, আমাদের শিক্ষার্থীরা কেউ নেই এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েই ওরা ক্যাম্পাসে এসে এরকম চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়েছে। আমরা এঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।
আবারো এরকম কিছু করার চেষ্টা করলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। শিক্ষকরা বলেন, স্বাধীনতার পর স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনেও এতো হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের উপর গণহত্যা চালিয়ে সরকার নিজের নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন। যদি শিক্ষার্থী হত্যার বিচার করতে না পারেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইবি শাখার সমন্বয়করা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি আর ৯ দফাতে নেই এখন এক দফাতে রূপান্তরিত হয়েছে।
আর সেই দফা হলো স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পদত্যাগ। অতিসত্বর তাকে পদত্যাগ করতে হবে। আমার ভাইদের রক্তের ওপর দিয়ে কোন সংলাপ নয়। আমরা অসহযোগ আন্দোলনে রয়েছি আর আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে। সর্বশ্রেণীর মানুষকে এ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হুশিয়ারি দিয়ে সমন্বয়করা বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আর কোন আল্টিমেটাম দিতে চায় না।
২৪ ঘন্টার মধ্যে হল খুলে দিতে হবে নচেৎ আমরা আমাদের মতো ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো। এদিকে আন্দোলন চলমান অবস্থায় আন্দোলনকারীদের একটি গ্রুপ ক্যাম্পাসের মধ্যে প্রবেশ করে শাখা ছাত্রলীগের কার্যালয় ভাঙচুর করেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ’দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল’ এর দেশরত্ন’ শব্দটি মুছে দিয়ে স্বৈরাচার’ শব্দ লিখে দেন তারা।
