ইবির শিক্ষার্থীরা ময়লার দুর্গন্ধে নাকাল - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

ইবির শিক্ষার্থীরা ময়লার দুর্গন্ধে নাকাল

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: মে ১৫, ২০২৪

ইবি প্রতিনিধি ॥ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র ফেলা হয় ময়লা আবর্জনা। সড়কের দুই পাশ, বিভিন্ন রাস্তার মোড় ও হলগুলোর চারপাশ রুপ নিয়েছে ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে। জিয়া মোড় থেকে শেখ হাসিনা হল পর্যন্ত রাস্তার পাশে ময়লা ফেলা যেন নিত্য দিনের চিত্র। এই রাস্তা দিয়ে আবর্জনার দুর্গন্ধে রীতিমতো নাক চেপে পার হতে হয় শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যস্ততম সড়কগুলোর মধ্যে অন্যতম জিয়া মোড় সংলগ্ন সাদ্দাম হোসেন হলের সামনের রাস্তা। প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। এর পাশে অবস্থিত চায়ের দোকান, খাবার হোটেল ও ভ্রাম্যমাণ দোকানে বসে শিক্ষার্থীরা খাওয়া দাওয়া করেন। তবে এই রাস্তার পাশেই স্তুপ করে রাখা হয়েছে ময়লা-আবর্জনা। এর পাশে ময়লা ফেলার জন্য ডাস্টবিন রাখা হয়েছে। তবে সেই ডাস্টবিন ময়লা আবর্জনায় ভরে গিয়েও আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে। এছাড়াও রাস্তার পাশের ড্রেন থেকে ময়লা তুলে সেগুলো সেখানেই দিনের পর দিন ফেলে রাখা হয়। এতে সে আবর্জনা থেকে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। এছাড়াও সেখানে জন্ম নিচ্ছে মশা-মাছিসহ বিভিন্ন রকমের ক্ষতিকর জীবানু। শুধু জিয়া মোড় সংলগ্ন সড়কটিই নয়, এমন অব্যাবস্থাপনা ক্যাম্পাসের অন্যান্য জায়গাতেও দেখা গেছে। ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু হল পুকুরের উত্তর দিকের রাস্তার পাশে প্রতিনিয়ত ময়লা ফেলা হয়। যার ফলে সেই জায়গাটি যেন ময়লার ভাগারে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও সাদ্দাম হোসেন হলের উত্তর পাশে, জিয়া হল মসজিদের পাশে প্রতিনিয়ত ময়লা ফেলা হয়। ফলে এসব স্থান দিয়া চলাচলের সময় দুর্গন্ধে নাক চেপে বা নাকে কাপড়, মাস্ক দিয়ে হাঁটতে হয় শিক্ষার্থীদের। তবে এর অধিকাংশ ময়লা আবর্জনাই স্থানীয় হোটেল, চায়ের দোকান ও ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান গুলো থেকে ফেলা হয় বলে জানা যায়। এদিকে জিয়াউর রহমান হলের পেছনের অবস্থা আরো খারাপ। বিভিন্ন হল ও দোকান থেকে ময়লা এনে সেখানে স্তুপ করে রাখা হয়। ফলে সেখান থেকে মশা ও ক্ষতিকর জীবানুর জন্ম হয়। এছাড়াও নিয়মিত পরিষ্কারের অভাবে হলের পেছনের ড্রেনে ময়লা পঁচে দুর্গন্ধ চড়াচ্ছে। এতে হলের দক্ষিন ব্লকের শিক্ষার্থীরা দুর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে পড়ছেন। এসব স্তূপাকৃতির ময়লা আবর্জনায় কিছুদিন পরপরই অপরিকল্পিতভাবে আগুন দেওয়া হয়। ফলে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে চারদিক। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও এসব অপরিকল্পিত আগুনের ফলে বিভিন্ন সময়েই গাছপালা পুড়ে যায়। এদিকে মফিজ লেকের উত্তর পাশের ময়লার স্তুপে প্রতিনিয়তই জ্বলে আগুন। এর ক্ষতিকর কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে পুরো লেক। এতে লেকের নির্মল পরিবেশে ঘুরতে যাওয়া লোকজন ধোঁয়ায় অতিষ্ট হয়ে পড়েন। জিয়া মোড় সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু হলের পুকুর পাড়ের সবজি বিক্রেতা শুক চাঁদ বলেন, জিয়া মোড়ের হোটেলের সব ময়লা এখানে এসে ফেলা হয়। ময়লার পঁচা দুর্গন্ধে দোকানে বসে থাকাই যায় না। তাছাড়া হোটেলের লোকদের এখানে ময়লা ফেলতে নিষেধ করলেও তারা শুনে না। হোটেলগুলো সবসময় এই পুকুরের পাশেই মাছের ময়লা, পচা ভাত ও অন্যান্য উচ্ছিষ্ট ফেলে রাখে। তাছাড়া কর্তৃপক্ষও এখানের ময়লা নিয়মিত পরিষ্কার করে না। নুর আলম নামে জিয়াউর রহমান হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, হলের পেছনে প্রতিনিয়ত ময়লা ফেলা হয়। সেগুলো পঁচে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। দুর্গন্ধে রুমের দরজা জানালা খোলা যায় না। সবসময় দরজা জানালা আটকিয়ে রাখতে হয়। ফলে হলের দক্ষিণ দিকের রুমের শিক্ষার্থীদের একপ্রকার বন্দীদশা তৈরি হয়েছে। এদিকে কর্তৃপক্ষও কোনো খোজ খবর রাখেন না। এ বিষয়ে এস্টেট অফিস প্রধান শামছুল ইসলাম জোহার অফিসে একাধিকবার গেলেও তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। পরে ফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে দায়িত্বরত জহির উদ্দীন বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত লোকবল নেই, সুইপার নেই। তাই আবর্জনাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না।