আহম্মদপুর পুলিশ ফাঁড়ির এস আই জামাল মৃধার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রভাবিত করার অভিযোগ - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

আহম্মদপুর পুলিশ ফাঁড়ির এস আই জামাল মৃধার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রভাবিত করার অভিযোগ 

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: অক্টোবর ২৪, ২০২৪

নিজ সংবাদ ॥ কুষ্টিয়া মিরপুরের আহম্মেদপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই জামাল মৃধার বিরুদ্ধে বিবাদী পক্ষের কাছে থেকে সুবিধা নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে। বাদী পক্ষের অভিযোগ কোন তথ্যের যাচাই বাচাই না করেই বিবাদীদের রক্ষা করতে এক তরফা প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশের এই কর্মকর্তা। এই ঘটনায় কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগও দিয়েছেন ভুক্তভোগী। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, কুষ্টিয়া সদর থানার কালিশংকরপুর এলাকার মোতাহার হোসেনের ছেলে মোঃ শাকিল পারভেজ কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার বরাবর এসআই জামাল মৃধার বিরুদ্ধে জমা দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করেন, পারিবারিকভাবে মাধ্যমে ২০২২ সালের মার্চ মাসে মিরপুর উপজেলার পোড়াদহের তেঘরিয়া গ্রামের নবীউল্লাহ বিশ^াসের ছেলে রাজ্জাক রাজের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আমার বোনের শশুরবাড়ির লোকজন বিভিন্ন সময় নগদ টাকাসহ আসবাবপত্র, মূল্যবান জিনিসপত্র দিতে বাধ্য করেছেন।

আমার বোনের সংসারে সুখ শান্তির কথা চিন্তা করে বিভিন্ন সময় নগদ ১০ লক্ষ টাকাসহ আরও প্রায় ৫ লক্ষ টাকারও বেশি আসবাবপত্র ও বিভিন্ন জিনিসপত্র কিনে দেই। বিবাদীরা যখন যা চেয়েছে আমার বোনের সংসার রক্ষার জন্য আমরা তখন তাই দিতে বাধ্য হয়েছি। এক পর্যায়ে বিবাদীরা পূর্ব পরিকল্পনামাফিক আমার বোনের সংসার ভেঙ্গে দেওয়ার লক্ষ্যে তার স্বামীকে বিদেশে পাঠিয়ে দেই। বিদেশে গিয়ে রাজ্জাক রাজ আমার বোনের সাথে সকল সম্পর্ক বিছিন্ন করে দেই। কোন উপায়ন্তর না দেখে আমার বোন কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯৮ ধারা মতে নালিশী মামলা দায়ের করেন।  যার মামলা নং ১১১৬-২৪। মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিয়ের দিন থেকে পরবর্তী সময়ে আমার বোনের স্বামীকে ১ ভরি ৪ আনা ওজনের স্বর্নের চেইন, ৬টি আংটি, আমার বোনের ১ ভরি ৬ আনা ওজনের কানের দুল, ২ ভরি ৮ আনা ওজনের দুটি চুরি, ২ ভরি ওজনের গলার হার দেওয়া হয়।

ওই সময় দেওয়া গহনাগুলোর দাম ছিলো প্রায় ৫ লক্ষ টাকারও বেশি। এছাড়াও ৫ লক্ষ টাকা মূল্যের আসবাবপত্রসহ ঘরের সব ধরনের জিনিসপত্র প্রদান করা হয়। বিদেশ যাওয়ার সময় নগদ ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার ন্যাস্ত হয় মিরপুর থানার অন্তর্গত আহম্মদপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জামাল মৃধার উপর। জামালা মৃধা তদন্তকালে আমার বোন বা আমাদের কারো সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ না করে আসামী পক্ষের সাথে যোগসাজেশে মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত কর্মকর্তা উপরোক্ত অধিকাংশ জিনিসপত্র উল্লেখ না করে আসামীদের সাথে যোগসাজেশে তাদের আইনের হাত থেকে রক্ষা করতে মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন। আদালত থেকে তদন্ত প্রতিবেদনের সার্টিফাইড কপি উত্তোলনের পর বিষয়গুলো আমরা জানতে পারি। এবিষয়ে আহম্মদপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জামাল মৃধার সাথে বাদীর ভাই শাকিল পারভেজ যোগাযোগ করলে বিভিন্নভাবে হুমকী-ধামকী দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে কুষ্টিয়া মডেল থানা ও কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারকে লিখিতভাবে জানানো হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিরপুর সার্কেল) আব্দুল খালেককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পুলিশ সুপারের নির্দেশনা থাকলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা আসামীদেও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্রকৃত সত্য আড়াল করে আসামীদের আইনের হাত থেকে রক্ষা করতে মনগড়া প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে। এবিষয়ে থানা ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত  কোন প্রতিকার মিলেনি। বিষয়টি নিয়ে স্বারাষ্ট্র উপদেষ্টা, বাংলাদেশ পুলিশের মহামান্য আইজিপিসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। যাতে আমার বোন ও আমার পরিবার ন্যায় বিচার পেতে পারি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত এস আই জামাল মৃধার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেছেন, আমি বাদী,  বিবাদী ও স্বাক্ষীগনের সাথে কথা বলে সমস্ত তথ্য উপাত্ত অনুসন্ধান করে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছি। তদন্তকালে যে তথ্য পেয়েছি, আমার প্রতিবেদনে তাই উপস্থাপন করেছি। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমরা কেউই আইনের উর্দ্ধে নয়। মামলাটি যেহেতু আদালতে বিচারাধীন আছে, তাই এ বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন। যদি তদন্ত ভুল প্রমাণিত হয় তাহলে আদালত পুনরায় অন্য কর্মকর্তার মাধ্যমে পূনরায় তদন্ত ভার অর্পণ করতে পারেন।