বিএনপি যে আস্ফালনই করুক না কেন তা সফল হবে না : সদর খান
বিএনপি যে আস্ফালনই করুক না কেন তা সফল হবে না : সদর খান। কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামীলীগ। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার টিকাটুলীর ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে প্রথম আত্মপ্রকাশ করেছিল দলটি। সেই দলই আজকের আওয়ামী লীগ।

বিএনপি যে আস্ফালনই করুক না কেন তা সফল হবে না : সদর খান
১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পরের বছর ১৯৫৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিল হয়। সেই কাউন্সিলেই দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দ বাদ দেওয়া হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল ধর্মনিরপেক্ষতার চর্চা ও অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা। বাংলাদেশকে স্বাধীন করার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়িত হয়েছে। এখন নির্বাচন সামনে রেখে যত চ্যালেঞ্জই আসুক না কেন, ৭৪ বছরের পরিপক্ব আওয়ামীলীগ তা মোকাবিলা করেই এগিয়ে যাবে।
১৯৬৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে যে ছয় দফা দাবি দেওয়া হয়, সেটিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম পদক্ষেপ বলে মনে করা হয়। এরপর ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের ভূমিকার কারণে দলটি এ অঞ্চলের নেতৃত্বে চলে আসে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দলের অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিপুল বিজয় এনে দেয়। সেই বিজয়ের ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয় এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতা পায়। ১৯৭৫ সালেই বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে এদেশীয় কুচক্রী মহল। তাঁর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় তখন প্রাণে বেঁচে যান।
এরপর ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। দীর্ঘ ২১ বছর পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসে ১৯৯৬ সালে। সেই সরকার পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করে ক্ষমতা ছাড়ে। এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে পুনরায় ক্ষমতায় আসে আওয়ামীলীগ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ টানা তিন মেয়াদের ক্ষমতায় রয়েছে। এখন আরেকটি জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে এসেছে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ আছে। আছে বলেই এই অনুধাবন ভালো হচ্ছে। শেখ হাসিনার পরিবার পরিজন ৭৫-এ শহীদ হয়েছিল। যারা জীবন দিয়ে গেছে, যাতে বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকে। আজকে যারা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যায়। তারা নির্বাচনে আসুক বা না আসুক ভোট হবেই। বিএনপি যে আস্ফালনই করুক না কেন তা সফল হবে না। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে যে উন্নয়ন করেছে তা অন্তহীন।

বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনার সরকার আবার দরকার। তাই দলের সকল ভেদাভেদ ভুলে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। অপরদিকে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী বলেছেন, ৭৪ বছরে আওয়ামীলীগ কোন দিন বাঙালি জাতির সাথে বেইমানি করে নাই। আওয়ামীলীগ গঠন হয়েছে দেশের মানুষের সেবা করার জন্য। বেইমানি করে যারা তারা সব সময়ই করে। আওয়ামীলীগ করেন যারা তারা এক কাতারে থাকতে হবে। দলের মধ্যে বেইমান ঢুকে পড়েছে। তাই সাবধান থাকতে হবে।
কর্মীরা আছে, থাকবে। নৌকার সাথে বেইমানি করতে পারবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। যার যে যোগ্যতা তাকে সেখানে দিতে হবে। জনগণের মুখে হাসি থাকলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুখি। আমেরিকা চায়না আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক। কিন্তু আওয়ামীলীগ জনগণের বন্ধু। বাংলাদেশ কারোর কাছে হাত পাতে না, ভিক্ষা চায় না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাব।
বিএনপি-জামায়াত ৭১সালে স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে। তারা এখনো করে যাচ্ছে। আগামী দিনে যত ষড়যন্ত্র হোক তা মোকাবেলা করবো আমরা। আগামী প্রজন্মও শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। সংগ্রাম উন্নয়ন ও অর্জনে গৌরদীপ্ত পথচলায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (২৩জুন) বিকাল ৪টার সময় কুষ্টিয়া শহরের এন এস রোডে বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেটে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে জেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জেলা আওয়ামীলীগের এই দুই নেতা এসব কথা বলেন। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খাঁন।
কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলীর পরিচালনায় সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলোয়াত করেন কুষ্টিয়া জেলা তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী হারুন অর রশীদ। গীতা পাঠ করেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডঃ শীলা বসু। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ও সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর সভায় বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মতিয়ার রহমান মজনু, ডাঃ আ ফ ম আমিনুল হক রতন, এ্যাডঃ অনুপ কুমার নন্দী।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাবু স্বপন কুমার ঘোষ, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার ইকবাল মাহমুদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মমিনুর রহমান মোমিজ, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য সাবেক ছাত্র নেতা হাবিবুল হক পুলক, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডঃ আ স ম আক্তারুজ্জামান মাসুম, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক, কুষ্টিয়া শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তাইজাল আলী খাঁন, কুষ্টিয়া জেলা যুব মহিলালীগের আহবায়ক হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শম্পা মাহমুদ, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সভাপতি আবু তৈয়ব বাদশা, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান অনিক এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আলহাজ্ব তরিকুল ইসলাম মানিক, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মীর শওকত আলী বকুল, জেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক, যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মুকুল হোসেনসহ জেলা আওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এর আগে বেলা সাড়ে তিনটার সময় কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের সামনে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। এ সময় জেলা আওয়ামীলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
