ইবিতে সিনিয়র আপুর দিকে তাকানোয় জুনিয়রদের মারধর!
বাসে জোরে কথা বলায় রাগান্বিত ভঙ্গিতে সিনিয়র আপুর দিকে তাকানোর অভিযোগে জুনিয়রদের মারধরের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২১ জুন) রাত ৮টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এলাকায় মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগী সকলেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

ইবিতে সিনিয়র আপুর দিকে তাকানোয় জুনিয়রদের মারধর!
ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া থেকে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন আইসিটি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আতিক হাসান এবং নোমান ও একই বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হিমেল।
এসময় বাসের মধ্যে চেচামেচি শুরু হওয়ায় পিছন ফিরে তাকান হিমেল। পিছনে বসা ছিলেন আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নওরীন নুসরাত। সেখানে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জিয়ন সরকারও ছিলেন। পরে বাস প্রধান ফটকের কাছে আসলে পিছনে ফিরে তাকানোকে বেয়াদবী উল্লেখ করে হিমেলের কাছে এর কারণ জানতে চান জিয়ন। এসময় হিমেলের বিভাগের সিনিয়র আতিক ও নোমান ঘটনাস্থলে আসলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে হিমেল, আতিক ও নোমানকে মারধর করেন জিয়ন, সিয়াম ও তাদের বন্ধুরা।
ভুুক্তভোগী হিমেল বলেন, বাসের মধ্যে চেচামেচি হচ্ছিল দেখে আমি পিছন ফিরে তাকাই। পরে আমাকে কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই সেখানে উপস্থিত জিওন, সিয়াম ও অমিয় সহ সবাই আমাদের মারধর শুরু করেন। পরে আমাদের বাস থেকে নামিয়ে দেয়। ওরা নোমান ভাইকে যখন মারধর শুরু করে তখন নওরীন আপু তাকে ছেড়ে দিয়ে আতিক ভাইকে মারতে বলেন। আতিক ভাইয়ের সঙ্গে নওরীন আপুর পূর্ব শত্রুতা থাকতে পারে। যে কারণে আমাদের পরিকল্পিতভাবে মারধর করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন- ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের জিয়ন সরকার ও সিয়াম, মার্কেটিং বিভাগের ইসতিয়াক পান্ডে এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অমিয় সাহা। তারা সকলেই ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের কর্মী। ঘটনার পর ক্যাম্পাসে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উভয়ের মাঝে সমঝোতা করে দেন।
এ বিষয়ে নওরীন নুসরাত বলেন, বাসে উঠার সময় আতিক আমার দিকে খুব বাজেভাবে ঘুরে তাকায়। বাসের মধ্যে আমাদের কথা একটু জোরে হওয়ায় জুনিয়র ছেলে (হিমেল) রাগান্বিতভাবে তাকায়। সেখানে থাকা আমার জুনিয়রদের বিষয়টি ভালো লাগেনি। তাই বাস ক্যাম্পাস গেইটে থামার পরে ওই ছেলেদের সঙ্গে কথা বলে। এসময় তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও একপর্যায়ে ধাক্কা ধাক্কি শুরু হয়। নোমান আমার পরিচিত হওয়ায় তার সামনে দাড়িয়ে যাই, যাতে ওকে কেউ টাচ না করে। পরে ওরা ক্যাম্পাস গেটে নেমে যায়। এরপর কি হয়েছে আমি জানিনা।

অভিযুক্ত জিয়ন সরকার বলেন, আমি শুধু জিজ্ঞেস করেছিলাম যে আপনারা কোন সেশনের, এমন করে তাকাচ্ছেন কেন আর বাজে ইঙ্গিত করতেছেন কেন। তখন তারা এটা অস্বীকার করেছিল। এ নিয়ে একটু কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে তাদের বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ক্যম্পাসে আরাফাত ভাই ও জয় ভাই (শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক) বিষয়টি মিউচুয়াল করে দেয়।
এছাড়াও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, শুনেছিলাম বাসের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়র ঝামেলা হয়েছিল। পরবর্তীতে উভয় পক্ষকে ডেকে কথা বলি। পরে জিয়নসহ সিনিয়ররা জুনিয়রদের কাছে ‘সরি’ বলে। পরে বিষয়টি সমঝোতা করে দেওয়া হয়।
