আন্তঃজেলা গরু চোর চক্রের ৪ সদস্য আটক!
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের সফল অভিযানে পোড়াদহ – আমলা সড়কের কুশবাড়ীয়া থেকে ১৩ ই এপ্রিল রাত ৩ টা ৫০ মিনিটের সময় তিনটি চোরাই গরু সহ আন্তঃজেলা গরু চোর চক্রের ৪ সদস্যকে আটক করা হয়েছে ।

আন্তঃজেলা গরু চোর চক্রের ৪ সদস্য আটক!
সেই সাথে তিনটি চোরাই গরু উদ্ধার সহ চোরাই কাজে ব্যবহৃত টাটা ট্রাক জব্দ করা হয়েছে । জব্দকৃত ট্রাকের রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার ঢাকা মেট্রো-ট, ২৪-৭২৬১ ।
গরু চুরির ঘটনায় বৃহঃবার ১৩ ই এপ্রিল কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর থানায় পেনাল কোডের ৪৫৭/৩৮০/৪১১ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন গরুর মালিক জেসমিন আক্তার । মামলা নং ১২ ।
এই বিষয়ে বৃহঃবার ১৩ ই এপ্রিল বিকেল ৪ টায় কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে পুলিশ সুপার খাইরুল আলম ।

আন্তঃজেলা গরু চোর চক্রের ৪ সদস্য আটক!
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার খাইরুল আলম জানান, জেসমিন আক্তার তার নিজ বাড়ীতে তিনটি গরু পালন করতেন । সে প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার ১২ ই এপ্রিল রাত আনুমানিক ৭ টার সময় ঘুমিয়ে পড়েন । এরপর সে বৃহঃবার ১৩ ই এপ্রিল ভোর ৫ টার সময় ফজরের নামাজ পড়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে গোয়াল ঘরের সামনে গিয়ে দেখার গোয়ালের তালা ভাঙ্গা এবং গোয়ালে কোন গরু নাই ।
খাইরুল আলম’র ভাষ্যমতে, ঠিক সেই সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার আসামী গ্রেফতার কারার জন্য কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট, ডিবি পুলিশ এবং মিপুর থানা পুলিশ যৌথভাবে পোড়াদহ থেকে আমলাগামী পাকা সড়কের কুশবাড়ীয়া গ্রামের শাহানূর এর দোকানের সামনে রাত আনুমানিক ৩ টা ৫০ মিনিটের সময় উপস্থিত ছিলো । ঠিক সেই সময় ঐ সড়কে ট্রাক দেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সন্দেহ হলে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের ইনচার্জ শাহদারা খান, এসআই আলমগীর হোসেন, এসআই শরিফুল ইসলাম এবং এএসআই মামুনুর রশীদ মিলে ট্রাকটি থামান ।
এরপর ট্রাকটি তল্লাশি করে ট্রাকের ভিতর তিনটি গরু পা বাধা অবস্থায় শোয়ানো ছিলো এবং সেই সাথে ট্রাকের মধ্যে আরো ছয় জন মানুষ দেখতে পান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান । ঘটনাস্থল থেকে সঙ্গে সঙ্গেই চার জনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এবং অন্য তিন জন ট্রাক থেকে লাফ দিয়ে পালিয়ে যায় ।
আটককৃতরা হলেন, কুষ্টিয়ার মিরপুর থানার পয়ারী গোরস্থান পাড়ার আরশেদ আলী শেখ’র পুত্র আজিবার শেখ (৪৮), চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা থানার জেহালা মাঠপাড়া’র মৃত কাশেম সরদারের পুত্র আকিরুল সরদার (২২), কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার মথুরাপুর’র নাসিরুল মন্ডলের পুত্র রানা মন্ডল (২৫) এবং কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার শশীধরপুর মন্ডল পাড়া’র আরজান মন্ডলের পুত্র মোজাম হোসেন (৩০) ।
পলাতক তিনজন হলেন, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার আল্লারদর্গা এলাকার জুয়েল ইসলাম (২৭), মেহরেপুর জেলার গাংনী থানার বামন্দী মঠমোড়া গো হাট এলাকার রেজাউল এর পুত্র সিরাজ (৪০) এবং কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার বেগুন বাড়ীয়া এলাকার লিটন আলী (২৭) । পলাতকদের মধ্যে জুয়েল ইসলাম ও লিটন আলী’র বাবার নাম জানা সম্ভব হয়নি বলে জেলা প্রশাসকের কর্যালয় সূত্রে জানা গেছে ।
উদ্ধারকৃত তিনটি গরুর আনুমানিক মূল্য দুই লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার খাইরুল আলম।

উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, আমি যদি কুষ্টিয়াতে আছি ততদিন কোন অপরাধী অন্যায় করে পার পাবে না । অপরাধী যত শক্তিশালী হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার খাইরুল আলম উপস্থিত সাংবাদিক সহ জেলা বাসীকে যে কোন অপরাধের তথ্য দিয়ে জেলা পুলিশ কুষ্টিয়া’কে সহায়তা করার অহবান জানান ।
সংবাদ সম্মেলন শেষে উদ্ধারকৃত গরু তিন গরুর মালিক জেসমিন আক্তার’কে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বুঝিয়ে দেন পুলিশ সুপর খাইরুল আলম ।
