মিরপুরের রহস্যজনক মৃত্যুর এক সপ্তাহ পরে থানায় গিয়ে জানা গেল অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে; বিচার চায় পরিবারের সদস্যরা - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

মিরপুরের রহস্যজনক মৃত্যুর এক সপ্তাহ পরে থানায় গিয়ে জানা গেল অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে; বিচার চায় পরিবারের সদস্যরা

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: জুলাই ৩১, ২০২৩
মিরপুরের রহস্যজনক মৃত্যুর এক সপ্তাহ পরে থানায় গিয়ে জানা গেল অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে; বিচার চায় পরিবারের সদস্যরা

মিরপুরের রহস্যজনক মৃত্যুর এক সপ্তাহ পরে থানায় গিয়ে জানা গেল অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। পরকিয়া করে বিয়ে করাই কাল হলো কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের অঞ্জনগাছি গ্রামের শাহেদা খাতুন (৩৫) নামক দুই সন্তানের জননীর । গত মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) আছরের সময় বাড়ীর কলপাড়ে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় তার মৃত দেহ উদ্ধার করে এলাকাবাসী। এদিকে শাহেদা খাতুনের মৃত্যুর তার দ্বিতীয় স্বামী সেলিম মাল (৪০) পলাতক আছে বলে জানা গেছে।

মিরপুরের রহস্যজনক মৃত্যুর এক সপ্তাহ পরে থানায় গিয়ে জানা গেল অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে; বিচার চায় পরিবারের সদস্যরা

মিরপুরের রহস্যজনক মৃত্যুর এক সপ্তাহ পরে থানায় গিয়ে জানা গেল অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে; বিচার চায় পরিবারের সদস্যরা

মিরপুরের রহস্যজনক মৃত্যুর এক সপ্তাহ পরে থানায় গিয়ে জানা গেল অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে; বিচার চায় পরিবারের সদস্যরা

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২০ বছর আগে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের অঞ্জনগাছি গ্রামের তাইজুদ্দীন এর ছেলে শফিকুল ইসলাম (৫০) এর সাথে বিয়ে হয় একই এলাকার ছলিম মিদ্দা’র মেয়ে শাহেদা খাতুনের। শফিকুল ইসলাম ও শাহেদা দম্পতি শাহেদ (১৮) এবং জুনায়েদ (৫) বছরের দুইটি ছেলে আছে। সংসারে অভাব অনাটনের কারণে শাহেদা খাতুন তার প্রথম স্বামী শফিকুল ইসলাম অনুমতি নিয়ে আনুমানিক ১০ বছর আগে ভাগ্যের অন্বেষনে জর্ডানে গার্মেন্টস শ্রমিক হিসাবে পাড়ি জমান। জর্ডানে গার্মেন্টস শ্রমিক হিসাবে সাড়ে তিনবছর কাজ করার পরে ছয় বছর আগে শাহেদা খাতুন দেশে আসেন। এর এক বছর পর শাহেদার প্রথম স্বামী শফিকুল ইসলাম ভাগ্যের অন্বেষনে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান এবং বর্তমানে মালয়েশিয়াতে প্রবাসী শ্রমিক হিসাবে কর্মরত আছেন।

google news

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

এদিকে স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগে শাহেদা খাতুন পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন কুষ্টিয়া মিরপুর পশুহাট এলাকার দুই সন্তানের জনক আজিজ মাল’র পুত্র সেলিম মাল (৪০) এর সাথে। সেলিম মাল’র সাথে পরকিয়া সম্পর্কের কারনে শাহেদা দুই বছর আগে তার প্রথম স্বামী শফিকুল ইসলামকে তালাক দিয়ে সেলিম মাল’কে বিয়ে করে ঢাকা’য় বসবাস শুরু করে।

অনুসন্ধানে জানা যায় সেলিম মাল এর আগেও তিনটা বিয়ে করছেন এবং শাহেদা’র প্রথম স্বামী শফিকুল ইসলামে চাচাতো ভাই । এলকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, শাহেদা জর্ডানে থাকায় কারণে এবং তার প্রথম স্বামী শফিকুল মালয়েশিয়ায় থাকার কারণে তার কাছে নগদ অনেক টাকা ছিলো । এছাড়াও শাহেদা জর্ডান থেকে দেশে ফিরে এসে তার নিজের নামে জায়গা কিনে বাড়ী করে। শাহেদা’র নগদ টাকার করহনেই সেলিম শাহেদাকে নানান প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে করে এবং তার সমস্ত নগদ টাকা ঢাকায় থাকা অবস্থায় খরচ করে ফেলে। টাকা শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে এক বছর আগে শাহেদা এবং সেলিম অঞ্জন গাছিতে ফিরে আসে। এরপর সেলিম শাহেদাকে তার জমি ও বাড়ী বিক্রি করতে বিভিন্ন সময়ে চাপ প্রয়োগসহ অত্যাচার করতো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীরা জানান, তাকে পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই। মৃত্যুর পর প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে মরিয়া হয়ে উঠে পড়ে লেগেছে বিশেষ একটি মহল। সুষ্ঠু তদন্ত হলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে ।

এই বিষেয়ে শাহেদার মা রওশনা’র সাথে কথা বলে জানা যায়, শাহেদা এবং সেলিম অঞ্জনগাছিতে ফিরে এসে রওশনাসহ শাহেদার দুই সন্তান শাহেদ (১৮) এবং জুনায়েদ (৫) কে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। তাই তারা বাধ্য হয়ে অঞ্জনগাছিতে কিছুদিন বসবাস করার পর বিল আমলায় ভাড়া বাসাতে থাকতেন। কিন্তু গত মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) আছরের সময় এলাকাবাসী তাকে খবর দিলে তিনি এসে শাহেদা’কে মৃত অবস্থায় দেখেন। পরে মিরপুর থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় এবং পরের দিন স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। শাহেদা’র মা রওশনা বলেন, তার মেয়েকে সেলিম পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে কলপাড়ে ওড়না দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায় । আমি আমার মেয়ে হত্যার সুষ্ঠ বিচার চাই ।

শাহেদা’র বড় ছেলে শাহেদ বলেন, আমার মা মারা যাওয়ার পর পুলিশ আমাদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়েছে। আমরা ভয়ে মামলা পর্যন্ত করতে থানায় যায়নি। ৩০ জুলাই রবিবার থানায় এজাহার জমা দিতে গিয়েছিলাম। থানায় এজাহার জমা নেয়নি। থানা থেকে বলেছে অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। আমি আমার মায়ের হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।

সেলিমের বিষয়ে সরেজমিনে খোঁজ নিতে মিরপুর পশুহাট সংলগ্ন তাদের বাড়ীতে গেলে দেখা মেলে ভানু নামের এক বৃদ্ধা মহিলার। তার সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি সেলিমের সৎ মা। সেলিমের বিষয়ে জানতে চাইলে বৃদ্ধা ভানু বলেন, সেলিম আজ দুই বছর এই এলাকায় থাকে না। ভানু’র কাছে শাহেদা হত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাতে আমরা শুনলাম সেলিম বউ মেরে ফেলে পলাইছে। সেলিমের মত সেলিমের বাপও সাত-আটটা বিয়ে করেছে।

এই বিষয়ে জানতে মিরপুর থানায় গেলে অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম অফিসিয়ালি কোন কথা বলতে রাজি না হলেও তিনি জানান, এই বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। এক বিষয়ে দুইটা মামলা হয় না। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসলে রিপোর্ট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন: