রঞ্জুউর রহমান ॥ কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের পক্ষথেকে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম এর আওতায় জেলা পর্যায়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল বুধবার (১৫ মে) সকাল দশটা জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা এর সভাপতিত্বে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম’ এর আওতায় জেলা পর্যায়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন আক্তার, সিভিল সার্জন কুষ্টিয়া ডাঃ মোঃ আকুল উদ্দিন,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ মিজানুর রহমান সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (ব্যবসা, বানিজ্য ও বিনিয়োগ শাখা, রেকর্ডরুম শাখা) আদিত্য পাল,সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, মুমতাহিনা পৃথুলা, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (সাধারণ শাখা, প্রবাসী কল্যাণ শাখা) সৈয়দ আফিয়া মাসুমা, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (আইসিটি শাখা ও ই-সেবা কেন্দ্র) মোঃ তাফসীরুল হক মুন,মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর উপপরিচালক পারভীন আখতার, সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ভূমি অধিগ্রহণ শাখা ও রেভিনিউ মুন্সিখানা শাখা)খাদিজা আক্তার,সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (সাধারণ শাখা) মুমতাহিনা পৃথুলা, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (ফরমস এন্ড স্টেশনারি শাখা ও লাইব্রেরি শাখা) ফারজানা সুলতানা, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (স্থানীয় সরকার শাখা) মোঃ আব্দুর রকিব জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল, মেডিকেল অফিসার ডাঃ সাজিয়া আফরিন জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরের দপ্তর প্রধানগণ এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।উপস্থিত বক্তারা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে সাউথ এশিয়া স্পিকারদের শীর্ষ সম্মেলন টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনবিষয়ক অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন, তিনি ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চান। প্রধানমন্ত্রীর এ স্বপ্নকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নেওয়া আমাদের অন্যতম একটি লক্ষ্য। এ লক্ষ্য পূরণে অবশ্যই প্রয়োজন শক্তিশালী আইন। যে আইনি কাঠামোর মধ্য দিয়ে মূল লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে।তামাকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে মানুষ অবশ্যই আগের তুলনায় অনেক সচেতন। আইন ও বিভিন্ন নির্দেশনা এবং সরকারি-বেসরকারি জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণার কারণে কমবেশি সবাই এখন তামাকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জ্ঞাত। পাবলিক প্লেসে ধূমপান এখন নিষিদ্ধ। ফলে টার্মিনাল, যানবাহন, হাসপাতালসহ বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে অবাধ ধূমপান অনেক কমে এসেছে। তামাকপণ্যের প্যাকেটে দৃশ্যমান সতর্কবার্তা দেওয়ার কারণে এটি ব্যবহারের ভয়াবহতা মানুষের মনোজগতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। একইভাবে সিনেমা, নাটকে সতর্কবাণী প্রচার সাপেক্ষে ধূমপানের দৃশ্য প্রচারের অনুমতি আছে। এটিও জনসচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রাখছে। তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ ও আইনের সঠিক বার্তা জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে, আইন প্রয়োগে কঠোরতা দেখাতে হবে। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি আমাদের জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। কার্যকর আইন এবং এর বাস্তবায়ন- এ দুটি বিষয়কে একসঙ্গে এগিয়ে নেওয়া এখন সময়ের দাবি। আমরা সেটা করতেই পারলেই তামাকজাত দ্রব্যের বহুল ব্যবহার, উৎপাদন, বিপণন কমে আসবে। কমে আসবে মৃত্যুহার এবং ফুসফুসের বিভিন্ন রোগসহ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুঝুঁকি। এতে প্রতিটি পরিবারে অর্থ নৈতিক সাশ্রয়ও হবে। জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা বলেন, বর্তমানে দেশে পাবলিক প্লেসে ধূমপান অনেক অংশে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। শুধুমাত্র আইন প্রয়োগ করে ধূমপান বন্ধ করা সম্ভব হবে না তার জন্য প্রয়োজন ব্যক্তির সদিচ্ছা। তামাক ও তামাকজাত পণ্য নিয়ন্ত্রণ করতে দৃশ্যমান স্থানে তামাক বিরোধী স্টিকার ও লিফলেট লাগাতে হবে। দেশের স্কুল-কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা এই ধূমপানের হুমকির শিকার বেশি হয়। ধূমপান হচ্ছে সকল মাদক গ্রহণের প্রথম ধাপ কারণ যে ধূমপান করে সে সহজে অন্য মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ে। তাই আমরা যদি ধূমপান বন্ধ করতে পারি তাহলে অন্যান্য মাদক সেবন থেকেও মানুষদের নিরুৎসাহী করা সম্ভব।
