কুষ্টিয়ায় বছরের পর পর বছর ধরে চলছে অবৈধ ইটভাটা। পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র না নিয়ে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দেদারসে চলছে অবৈধ ইটভাটা।
ছাড়পত্র নেই, কুষ্টিয়ায় তবুও চলছে ইটভাটা
ইটভাটা সমিতির নেতারা ভাটা মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে এই টাকা দিয়ে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করে পোড়ানো হচ্ছে গাছ। ফলে ভাটার দূষিত গ্যাস, তাপ ও ছাই আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, চরম ক্ষতির মুখে পড়ছেন স্থানীয় কৃষকরা।
পরিবেশ অধিদফতরের তালিকা অনুযায়ী, জেলায় ১৬১টি ইটভাটা আছে। এরমধ্যে পরিবেশের ছাড়পত্র আছে মাত্র ১৮টির। ১৪৩টিরই কোনো অনুমোদন নেই অর্থাৎ অবৈধ। এসব ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, ব্যবহার হচ্ছে কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা করা হলেও নেয়া হচ্ছে না কোনো আইনি ব্যবস্থা। পরিবেশ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে দাপটের সাথে চলে এসব অবৈধ ইটভাটা।
ইটভাটা সংলগ্ন এলাকার কৃষক বাবলু বলেন,আগে জমিতে অনেক ধান হতো। কিন্তু পাশে ভাটা হওয়ার ২ থেকে ৩ বছর পর ধান আর ভালো হয় না। তাই বাধ্য হয়ে এখন জমিতে তামাক চাষ করছি।
কৃষক মকলেছুর রহমান জানান, ভাটার কালো ধোঁয়ায় এলাকার গাছের সবুজপাতাগুলো এখন কালো হয়ে গেছে। গাছে আর কোনো ফল বড় হতে পারে না। ছোট থাকতেই ঝড়ে পড়ে যায়। তাই বাজার থেকে ফল কিনে খেতে হয়। আগে নিজের গাছের ফল খেতাম। ভাটা হওয়ার পর থেকে খেতে পারি না। সরকারের উচিত এসব ভাটা বন্ধ করে দেয়া।
মিরপুর উপজেলার মশান পিপি আর ব্রিকস ইটভাটা মালিক হাজী নুরুল বলেন, আমাদের সমিতি কম বেশি করে চাঁদার টাকা নেয়। কোথায় কি দেয় এটা তাঁরায় ভালো জানেন। প্রশাসনসহ এদিক সেদিক কম বেশি খরচ করায় তো লাগে। পুরোটাই দেখেন ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়া প্রফেসরসহ দুই একজন।
কুষ্টিয়ার একাংশ ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়ারুল ইসলাম জিয়া বলেন, আমার নিজের ইটভাটাও জরিমানা হয়। জেলায় ইটভাটা সমিতির মিটিং হয়। সেখানে ৫ হাজার টাকা চাঁদা ধরা হয়। আর কাউকে ম্যানেজ করার কোনো প্রশ্নই আসে না। কেউ বলে থাকলে এটা একেবারেই তার মন গড়া কথা। পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া অনেক ইটভাটা রয়েছে কুষ্টিয়ায়।
পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক হাবিবুল বাসার বলেন, আমাদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে অবৈধ ইটভাটা চলবে কথাটি সঠিক নয়, আমরা অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালাচ্ছি। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আবারও অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান এই কর্মকরর্তা।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ ইট ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া হবে।
আরও দেখুনঃ