এলজিইডি কর্মচারীর ধারলো অস্ত্রের আঘাতে আহত একাধিক

এলজিইডি কর্মচারীর ধারলো অস্ত্রের আঘাতে আহত একাধিক। গত ১০ ই মে বুধবার রাত আনুমানিক ৮ টা সময় কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলার তালবাড়িয়া ইউনিয়নের চারুলিয়া গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে হামলার ঘটনা ঘটেছে । এই ঘটনায় মিরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও অভিযোগ জমা নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন অভিযোগকারী নজরুল মাল ।

এলজিইডি কর্মচারীর ধারলো অস্ত্রের আঘাতে আহত একাধিক

এলজিইডি কর্মচারীর ধারলো অস্ত্রের আঘাতে আহত একাধিক
এলজিইডি কর্মচারীর ধারলো অস্ত্রের আঘাতে আহত একাধিক

সরেজমিনে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত এবং ব্যান্ডিজ নিয়ে সাইদুল মন্ডল (৫৫) হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কারতাচ্ছে এবং পায়ে বান্ডেজ নিয়ে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় আলিফ (১৫) তার বাবার সাথে কখনও মিরপুর থানায়, আবার কখন চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ঘুরছে ১০ই মে ঘটনার পর থেকে । এদিকে তিন দিন গড়িয়ে গেলেও থানা অভিযোগ জমা না নেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অভিযোগকারী নজরুল মাল ।

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

বাদী থেকে সংগৃহিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১০ ই মে বুধবার রাত আনুমানিক ৮ টা সময় কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার তালবাড়িয়া ইউনিয়নের চারুলিয়া গ্রামের মৃত আঃ মজিদ এর চার পুত্র ইদ্রীস (৪৮), ইচ্ছা (৪৫) ও সিদ্দিক (৫০), হাসেম মেম্বার (৬০), দাউদ সর্দারের পুত্র বাধন (১৮), মৃত কেরামত সর্দ্দারের তিন পুত্র দাউদ (৫৫) ও মিনারুল (৩৫), মৃত আঃ মজিদ এর পুত্র সাথে নজরুল মাল এবং তার পরিবারের পৈতিৃক জমাজমি নিয়ে দীর্ঘ দিন বিরোধ চলামান এবং বিজ্ঞা আদালতের জারি করা আদেশ মোতাবেক উক্ত জমিতে বাদী ও বিবাদী কোন পক্ষই ভোগদখলে যেতে পারবে না।

কিন্তু আদালতের আদেশ অমান্য করে গত বুধবার ১০ ই মে রাত ৮ টার সময় ইদ্রীস, ইচ্ছা ও সিদ্দিক, বাধন, দাউদ, মিনারুল, হাসেম মেম্বার পুকুরে মাছ ধরতে যায় । সেই সময় নজরুল মাল এর পুত্র আলিফ (১৫) এবং ভাই সাইদুল মন্ডল (৫৫) তাদেরকে মাছ ধরতে নিষেধ করলে ইদ্রীস, ইচ্ছা ও সিদ্দিক, বাধন, দাউদ, মিনারুল, হাসেম মেম্বার তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে ।

এক পর্যায়ে মৃত আঃ মজিদ এর চার পুত্র ইদ্রীস সাইদুল মন্ডল এর জামার কলার ধরে টানা হেচড়া করে মাটিতে ফেলে দিয়ে কিলঘুষি মারা সহ এলাপাতাড়ী আঘাত করতে থাকে এবং একপর্যায়ে ইদ্রিস তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দ্বারা ভাই সাইদুল মন্ডল হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করতে গেলে ভাই সাইদুল মন্ডল নিজেকে সারাইয়া নিলে আঘাত ঠোঁটে এবং বাম পায়ের পাতায় গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । সেই সময় ইদ্রীস, ইচ্ছা ও সিদ্দিক, বাধন, দাউদ, মিনারুল, হাসেম মেম্বার তাদের হাতে থাকা বাশের লাঠি, কাটের বাটাম, লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ী মারপিট করে সাইদুল মন্ডল’র শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্তক জখম করে।

তখন আলিফ তার চাচা সাইদুল মন্ডল’কে রক্ষা করতে গেলে হাসেম মেম্বার তার জামার কলার ধরে মাটিতে ফেলে দেয় এবং সেই সময় ইদ্রীস, ইচ্ছা ও সিদ্দিক, বাধন, দাউদ, মিনারুল, হাসেম মেম্বার তাদের হাতে থাকা বাশের লাঠি, কাটের বাটাম, লোহার রড দিয়ে মারপিট করে । যার ফলে আলিফের বামপায়ের হাড় ভেঙ্গে যায় বলে নজরুল মাল লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করে ।

পরবর্তিতে চারুলিয়া এলাকার মৃত জলিল মালিথা’র পুত্র আইজাল মালিথা (৪৪), মৃত মসলেম মন্ডলের পুত্র খাইরুল (৫৫) এবং সোরাফ এর পুত্র গিয়াস (৩৫) উপস্থিত হয়ে আলিফ এবং ভাই সাইদুল মন্ডল’কে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান ।

হামলার শিকার সাইদুল ইসলাম জানান, এল জি ডি কর্মচারী মজিদ সরদারের ছেলে ইদ্রীস সদ্দার তার গত বুধবার এশার নামাজের পর চারুলিয়া বাজারে অবস্থিত আমার দোকানে দলবল নিয়ে এসে আমি বসে থাকা অবস্থায় অতর্কিত হামলা করে এবং আমাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে ডাসা দিয়ে কোপাতে থাকে, ইট দিয়ে দাঁতের উপর মেরে দাঁত ভেঙে দেয় এবং আমার ভাতিজাসহ বাডির সদস্যদের উপর হামলা করে আমাদের বাঁচানোর কেউ ছিল না গুরুতর অবস্থায় আমি হাসপাতালে ভর্তি আছি আজ কয়েক দিন দেখার কেউ নেই।

সাইদুল আরও জানান মিরপুর এলজিডি অফিসের কর্মচারী ইদ্রিস সদ্দার মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে মিরপুর অফিসে বদলি হয়ে আসেন, এসে এলাকায় অরাজকতা সৃষ্টি করে চলেছে প্রতিদিন মদ্যপান করে এলাকা বাসীর উপর চড়াও হয় অস্বাভাবিক কাজকর্ম করে বেড়ায় । স্থানীয় চেয়ারম্যান হান্নান মন্ডলের সাথে তার বেশ সখ্যতা এলজিডি অফিসে চাকরি করে সেখানে ডিউটি না করে ইউনিয়ন পরিষদের ডিউটি করেন তিনি। চেয়ারম্যানকে রাস্তার কাজ কেনাবেচার সাহায্য করেন এবং কমিশন বাণিজ্য করেন। নির্বাচনের সময় ভোট বেচাকেনা সহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হয় ইদ্রিস।

এলাকায় চাকরি করে সুযোগ সুবিধা নেওয়ার জন্যই এক নেতাকে বড় অংকের ঘুষ দিয়ে এলাকায় বদলি হয়ে আসেন ইদ্রিস। তার জন্য আমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারছি না। প্রশাসনের কাছে এই রকম ত্রাস সৃষ্টিকারী ফ্যাসিজ বাদী ইদ্রিসকে দ্রুত অপসারণ করে শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি, আমাদের বাঁচতে দিন এই অসাধু ব্যক্তির হাত থেকে।

এই বিষয়ে ইদ্রীসের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমাদের মাঝে জায়গা জমি নিয়ে ঝামেলা আছে । প্রশাসন থেকে স্ব স্ব অবস্থানে থাকার কথা জানিয়ে ছিলো । তারা অন্যায় ভাবে পুকুরে মাছ ধরতে বাধা দিয়েছিলো । আমাদের লোকজনকেও তারা মেরেছে । আমরা থানায় মামলাও করেছি ।

এই বিষয়ে জানতে মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে দুই পক্ষই থানায় অভিযোগ জমা দিয়েছে । বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে ।

আরও পড়ুন:

Leave a Comment